পূজা দাস ঠাকুর :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ১৯শে,জুলাই :: মালদা :: জুতা সেলাই করে সংসার চালানো মালদার এই ছেলেটি এবার উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর কনুয়া হাইস্কুলে প্রথম হয়েছে। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই দিনমজুর মা আর শ্রমিক বড়ভাইয়ের সঙ্গে রোজগারে হাত লাগায় সঞ্জয়। জুতা সেলাই করত দুই ভাই।সেই টাকায় চলত তাদের সংসার ও পড়াশোনায়। উচ্চমাধ্যমিকের ফল বের হতেই তিনজনের মুখে হাসি।
৯০ শতাংশ পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর কনুয়া হাইস্কুলে প্রথম হওয়া সঞ্জয়ের ইচ্ছা ইংরেজি নিয়ে স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করার। তবে টাকা আসবে কোত্থেকে, তা নিয়েই এখন তাদের চিন্তা। সঞ্জয়দের বাড়ি মালদহের চাঁচলে। যখন তার দেড় বছর বয়স, মারা যান বাবা জগদীশ। পাঞ্জাবে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি।ছোট ছোট সন্তানকে নিয়ে অথৈ জলে পড়েন জগদীশের স্ত্রী কল্যাণী। অন্যের জমিতে ধান কেটে ও দিনমজুরি করে কোনোমতে টেনেছেন সংসার। একটু বড় হয়ে মাকে সাহায্য করতে কাজে নেমে পড়ে সঞ্জয়।
বড়ভাই সাগরের সঙ্গে মিলে জুতা সেলাই করত। সঙ্গে চলত পড়াশোনাও। পাবলিক পরীক্ষায় সাফল্য পেয়েও আবারও বসতে হয়েছে জাতীয় সড়কের ধারে, জুতা সেলাইয়ের সরঞ্জাম নিয়ে।সঞ্জয় বলে, ‘সংসারের খরচ আছে। উচ্চমাধ্যমিক পাস করে পড়তে গেলেও টাকা লাগবে।’
এ খবর জানাজানি হলে চাঁচল-১ ব্লকের কর্মকর্তা সমীরণ ভট্টাচার্য নিজে সঞ্জয়ের বাড়িতে যান। তার মায়ের জন্য বিধবাভাতার বন্দোবস্ত করেন। সঞ্জয়ের উচ্চমাধ্যমিকের ফল শুনে সমীরণ বলেন, ‘খুব ভালো খবর। ভবিষ্যতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তা দেখবে প্রশাসন।’ এতদিন পঞ্চায়েতে আবেদন করেও যে ভাতা পাননি কল্যাণী, কর্মকর্তার এক কথায় তা হয়ে গেল। দেখে কিছুটা বিস্মিত সঞ্জয়। তাই সে ঠিক করেছে, মানুষের পাশে দাঁড়াতে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষা দিয়ে আমলা হবে। কনুয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজা চৌধুরী বলেন, ‘ও যা ফল করেছে তাতে আমরা সবাই খুশি।’