আজ বাবরি মসজিদ কাণ্ডের রায় দেবে বিশেষ সিবিআই আদালত – গোটা দেশ মুখিয়ে রয়েছে রায়ের আশায় !

0
357

আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ৩০শে সেপ্টেম্বর :: নয়াদিল্লি :: আজ বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় রায় দিতে চলেছেন  বিশেষ সিবিআই আদালত।  ২৮ বছরের পুরোনো ওই মামলায় অভিযুক্তের তালিকায় থাকা সকলকে আদালতে হাজির থাকতে হবে।  এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক সুরেন্দ্র কুমার যাদব।

অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন  তৎকালীন উপপ্রধানমন্ত্রী ও সিনিয়র বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুরলী মনোহর যোশী ও উমা ভারতী,  বিনয় কাটিয়ার, উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের মতো হেভিওয়েট বিজেপি নেতা-নেত্রীরা।

সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বহুলালোচিত রাম মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বাবরি মসজিদ ধ্বংসের রায়ের দিকে নজর রাখছেন মুসলিমরা। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার প্রায় ২৮ বছর পরে আজ বিশেষ সিবিআই আদালত ওই মামলার রায় দেবে। বিজেপির অনেক সিনিয়র নেতা ওই মামলায় অভিযুক্ত।

আসন্ন রায় প্রসঙ্গে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ-এর সভাপতি সাইয়্যেদ সাদাতুল্লাহ হুসাইনি বলেছেন, ‘১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর যা ঘটেছিল তা ছিল একটি সুচিন্তিত কৌশল। এখন যখন রায় আসছে, আমরা ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করি। এক্ষেত্রে, সমস্ত ষড়যন্ত্রকারী সবার সামনে আছে, এটি কারো কাছ থেকে গোপনীয় বিষয় নয়। এটি দেশের বিচার ব্যবস্থারও পরীক্ষার মুহূর্ত।’

অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের সদস্য কামাল ফারুকী বলেন, ‘২৭ বছর আগে অযোধ্যাতে যা ঘটেছিল তা রাতের অন্ধকারে নয় বরং দিনের আলোয় হয়েছিল। গোটা দেশ তা দেখেছিল। এক্ষেত্রে আদালতের রায়ে এমন শাস্তি দেওয়া উচিত যাতে দেশে পুনরায় কোনো ধর্মের ধর্মীয় স্থানের বিরুদ্ধাচরণে কারো কোনো সাহস না হয়।’

তিনি আরো বলেন, ‘১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর দেশের বৃহত্তম অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল। ওই ঘটনার কারণে, দেশের সামাজিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এজন্য ওই মামলায় আদালতের উচিত কোনো অভিযুক্তকে ছাড় না দেওয়া।’

অল ইন্ডিয়া মুসলিম মজলিশ-ই-মুশওয়ারাত-এর মাওলানা আবদুল হামীদ নোমানী বলেন, অযোধ্যা মামলার আগের রায়টিতে সুপ্রিম কোর্টও স্বীকার করেছিল যে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যাতে যা ঘটেছিল তা বেআইনি ছিল। এমন পরিস্থিতিতে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া উচিত। অন্যথায় তারা অন্যান্য ধর্মীয় স্থানের বিরুদ্ধেও এ জাতীয় দুঃসাহস দেখাতে পারে।

অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় মোট ৪৯ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ওই মামলায় এখন ৩২ জন অভিযুক্ত রয়েছেন। বিজেপি’র সিনিয়র নেতা এল কে আদভানি, মুরালি মনোহর যোশী, উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং, বিজেপি’র ফায়ার ব্র্যান্ড নেত্রী উমা ভারতী, বিনয় কাটিয়ারসহ মোট ৩২ জন অভিযুক্ত। আজ ৩০ সেপ্টেম্বর ওই মামলার রায় ঘোষণা হবে। অভিযুক্ত সকলকে আজ বিশেষ সিবিআই আদালতে উপস্থিত থাকতে হবে।

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, এলকে আদভানি, মুরলী মনোহর যোশী, কল্যাণ সিং, উমা ভারতী, বিনয় কটিয়ার, সাধ্বী ঋতম্ভরা, মোহন্ত নৃত্য গোপাল দাস, ডাঃ রাম বিলাস বেদান্তি, চম্পত রাই, মোহন্ত ধর্মদাস, সতীশ প্রধান, পবন কুমার পান্ডে, লল্লু সিং, প্রকাশ শর্মা, বিজয় বাহাদুর সিং, সন্তোষ দুবে, গান্ধী যাদব, রামজি গুপ্ত, ব্রজভূষণ শরণ সিং, কমলেশ ত্রিপাঠি, রামচন্দ্র খত্রী, জয় ভগবান গোয়েল, ওম প্রকাশ পান্ডে, অমর নাথ গোয়েল, জয়ভান সিং পোওয়াইয়া, স্বামী সাক্ষী মহারাজ, বিনয় কুমার রাই, নবীন ভাই শুক্লা, আরএন শ্রীবাস্তব, আচার্য ধর্মেন্দ্র দেব, সুধীর কুমার কক্কর এবং ধর্মেন্দ্র সিং গুর্জর।

উগ্র হিন্দুত্ত্ববাদীদের দাবি, ওই স্থানটি হিন্দুদের ভগবান রামের জন্মস্থান। সম্প্রতি সেই জমিতেই রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এরআগে সুপ্রিম কোর্ট সেখানে রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল। অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছর পরে লক্ষনৌয়ে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা বিশেষ সিবিআই (কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা) আদালতে ওই মামলার রায় বেরোবে আজ ৩০ সেপ্টেম্বর। অবশ্যই দেখুন সঙ্গের ভিডিওটি । বাবরি ধ্বংসের নেপথ্য কাহিনী

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here