২৪ ঘন্টা লাইভ সংবাদাতা / রাজীব গুপ্তা / ব্যারাকপুর / ৭ জুন ২০২৩ : এক বছর অতিক্রান্ত হয়েছে কাঁচরাপাড়া পৌরসভার উপপ্রধানের শপথ নিয়েছেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় । কিন্তু প্রথমদিন থেকে পৌরপ্রধান কমল অধিকারী প্রতিনিয়ত পৌরসভায় এসে মানুষের কাজ করলেও এখানে খালি পড়ে থাকে উপ প্রধানের চেয়ার।
না তিনি ওয়ার্ডে সেরম ভাবে সক্রিয় থাকেন, এমন কি তার বাড়ির ঢিল ছোড়া দূরত্বে প্রগতি সংঘ ক্লাবের সামনে দিনের পর দিন বিরাট আকারের পুকুর ভরাট হয়ে থাকলেও নেই কোনো হেলদোল।
না তাকে দেখা যায় পৌরসভার কোনো কর্মসূচিতে না বোর্ড মিটিংয়ে। কিন্তু তার এতো গভীর নিষ্ক্রিয়তার কারণ কি ? শুধু মাত্র তার সাথে আর চলার মত ১০০ টি ছেলে না থাকাই কি মূল কারণ ? না কি এর পেছনে রয়েছে কোনো অন্য রহস্য ? আজ বীজপুরের দুই পৌরসভা কাঁচরাপাড়া ও হালিশহরে থাবা বসিয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI
শোনা যাচ্ছে যে এই হানাপৌরসভায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলা কিনারা করতেই, আর সেই নিয়োগ হয়েছিল যখন দুই পৌরসভায় রাজ করতেন দুই রায় মানে সুদামা রায় এবং অংশুমান রায় আর তারা যে চলতেন অন্য এক রায়ের নির্দেশে, মানে তৎকালীন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের অঙ্গুলিহিলনে । এই পৌরসভা গুলিতে দুর্নীতি হয়েছিল এতে কোনো জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন উঠবে কেন ?
যেমন, কাঁচড়াপাড়া তে খোদ বিরোধিতা করেছিলেন তৎকালীন উপপ্রধান মাখন সিনহা, প্রশ্ন তুলেছিলেন ঝুম্পা সিং এবং আরো কয়েকজন দলীয় পার্ষদ। একই ভাবে হালিশহর পৌরপ্রধানের বিরুদ্ধেও নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির কথা তুলে বিপ্লবীর ভূমিকা নিয়েছিলেন মৃত্যুঞ্জয় দাস, অশোক যাদব, প্রণব লৌহ, সুজাতা বিশ্বাস এর মত মোট ১১ যন কাউন্সিলার।
ঠিক তার পর “যেদিন মুকুল রায় বলবেন সেদিন পদত্যাগ করে দেব” বলে একটি স্থানীয় সংবাদপত্রে নিজেও বিবৃতি দিয়েছিলেন তৎকালীন পৌরপ্রধান অংশুমান রায়।
তার মানে এতে কোনো সন্দেহ নেই যে অংশুমান যা করেছেন বিধায়ক থেকে পরামর্শ নিয়েই করেছেন ঠিক যেমন এখনকার পৌরপ্রধান কমল অধিকারী বা শুভঙ্কর ঘোষ রা পরামর্শ নিয়ে থাকেন বর্তমান বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর সাথে ।
এবার বিরোধীরা বলছেন যে নানান দুর্নীতির তদন্তে পৌরসভায় যেকোনোদিন হানা দিতে পারে CBI আধিকারিকেরা, তা জানতেন শুভ্রাংশু ।
এমনও প্রশ্ন উঠছে যে, তিনি বিগত দিনের দুর্নীতির নথি নষ্ট করতেই পৌরপ্রধান হতে চেয়েছিলেন না তো ? কারণ তা না হতে পেয়ে আর পৌরসভায় যান না তিনি। তার পিতা নিজেকে বিজেপি নেতা বলে দেয়ার পর থেকে আর দলীয় কোনো কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছেন না তাকে।
বিগত ১০ বছরে অনেকেই সাইকেল থেকে উঠেছেন স্করপিও বা XUV তে। টালির ঘর থেকে হয়েছে বিলাসবহুল বহুতল। ভাঙা বিড়ি থেকে পৌঁছেছেন নেভিকট পর্যন্ত। সম্প্রতি শুভ্রাংশুর অতিঘনিষ্ট এক প্রাক্তন কাউন্সিলার হাইরোডের উপর অবস্থিত নিজের জমি স্থানীয় এক সুদখোর কে বিক্রি করেছেন প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ্য টাকার বিনিময়ে ।
কোথাও যেন ভীত সন্ত্রস্ত বলেও মনে করছেন অনেকে। কারণ যে ভাবে বুক ফুলিয়ে প্রতিদিন নির্ভীক ভাবে পৌরসভাতে বসেন পৌরপ্রধান কমল অধিকারী কিন্তু সেখানে নিজের চেম্বারে যেতেই দ্বিধা বোধ করছেন কেন উপ প্রধান ? কেউ কেউ বলছেন এই সব ঝামেলা থেকে বাঁচতেই নিজেকে আবার বিজেপি বলে বেড়াচ্ছেন তার পিতা।
আজ সত্যি সাহসিকতার পরিচয় দিলেন কাঁচরাপাড়া ও হালিশহর পৌরসভার প্রধান কমল অধিকারী ও শুভঙ্কর ঘোষ। যেখানে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা হানা দিলেও বিন্দু মাত্র বিচলিত হলেন না তারা । এতে মুখ বন্ধ হয়ে গেলো নিন্দুকেদের এবং হালিশহরের উপ প্রধান পৌরসভায় উপস্থিত হয়ে পৌরপ্রধানের পাশে থাকলেও কিন্তু নিজের পাশে নিজের উপ প্রধান কে পেলেন না কাঁচরাপাড়া পৌরপ্রধান কমল অধিকারী।
এতে মনক্ষুন্ন দলীয় কর্মীরা । তারা বলছেন যে, কাজ নাই করতে হলে এই ভাবে তিনি অযথা কেন ধরে রেখেছেন উপপ্রধানের চেয়ার ? দিয়ে দিক কোনো যোগ্য কাউন্সিলার এর হাতে। কিন্তু আজ পৌরসভায় CBI হানা দেয়ার সময় এবং বীজপুর তৃণমূলের নব জোয়ার এর সমর্থনে বিশাল পদযাত্রায় উভয় জায়গায় শুভ্রাংশুর অনুপস্থিতিতে উঠেছে বড় প্রশ্ন।