করোনার আলোয় ভারতের ৯ মিনিট

0
642

আনন্দ মুখোপাধ্যায় ::২৪ঘন্টা লাইভ:: ৬ই, এপ্রিল :: কোলকাতা :: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডাকে গতকাল রবিবার রাত ৯টায় ৯ মিনিটের জন্য ঘরের আলো নিভিয়ে মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চলাইট আর মোবাইল ফোনের টর্চের আলো জ্বালায় দেশের আম জনতা । করোনা প্রতিরোধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার জন্য ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এই কর্মসূচির তীব্র সমালোচনা করেছেন।মোদির ডাকা এই কর্মসূচির বিরোধিতা করে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বাম দলসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, এতে দেশের বিদ্যুতের গ্রিড বিপর্যয়ের মতো ঘটনা ঘটতে পারে। ঘরের ফ্রিজ, পাখা, এসি বন্ধ করে দেওয়া হলে বিপর্যয়ও ঘটতে পারে। এরপরই কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানায়, এই কর্মসূচিতে শুধু ঘরের আলো নিভিয়ে শামিল হতে হবে। শিল্পকারখানা বা সড়কের আলো বন্ধ থাকবে না।ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মানুষ বাজি ফাটায়, আতশবাজি ফাটায়। ওড়ায় ফানুস। বাজায় শঙ্খ। কেউ কেউ আবার উলুধ্বনিও দেয়।পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বহু এলাকায় আতশবাজির চমক দেখা যায়। অনেকে বলেন, ‘আমরা এই আতশবাজির মাধ্যমে তাড়িয়ে দেব করোনাকে।’

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ও তাঁর স্ত্রীও আলো নিভিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন। রাত ৯টায় রাজ্যপালের বাসভবন ও দপ্তর রাজভবনের আলো নিভে যায়। এ সময় রাজ্যপাল ও তাঁর স্ত্রী হাতে মোমবাতি নিয়ে রাজভবনের সামনে দাঁড়ান। রাজ্যের বহু এলাকায় এই একই চিত্র দেখা যায়।করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে মোদির ডাকে একজোট হয়ে ২২ মার্চ দেশজুড়ে ‘জনতা কারফিউ’ পালন করা হয়। তাতে ব্যাপক সাড়া মিলেছিল। এরপর প্রধানমন্ত্রী ২৪ মার্চ রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় দেশব্যাপী তিন সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেন। এই লকডাউন চলার কথা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। এই লকডাউনেও প্রচুর সাড়া মেলে দেশবাসীর কাছ থেকে। তবে দেশের বহু এলাকায় এই লকডাউন অমান্য করে রাস্তায় নামার কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটেছে। লকডাউন এখনো চলছে। আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত এটি চলবে।

মোদির এই কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য বিজেপি সায় দিলেও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস, বিরোধী জাতীয় কংগ্রেস এবং বাম দল সমর্থন দেয়নি। বিরোধী দলের নেতারা বলেছেন, নাটক ছেড়ে বাস্তবে আসুন। করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসা, গবেষণা ও পরিকাঠামোয় জোর দিন। লকডাউনের ক্ষত কাটাতে বিভিন্ন আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা দিন। তালি আর থালির পর এবার বারান্দায় দাঁড়িয়ে মোমবাতি প্রজ্বালন! তারা প্রশ্ন তুলেছেন, দেশের কোটি কোটি মানুষের ঘরের বারান্দাই নেই। তারা কী করবে ? এটা কি তালাবন্দীর উৎসব পালন নাকি?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here