রাজীব গোপ্তার রিপোর্ট : রাজ্য জুড়ে বলা যেতেই পারে চলছে শাসকদলের নেতাদের বা সমর্থকদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হানা। আর্থিক দুর্নীতির দায় তৃণমূলের দুই তাবড় মুখ পার্থ চ্যাটার্জি ও অনুব্রত মণ্ডল অবশ্যই তাদের জালে। তবে CBI বা ED র তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি তারা নিজের টাস্ক পূরণ করতে মরিয়া। গত শুক্রবার দোসরা সেপ্টেম্বর হালিশহর পুরপ্রধান রাজু সাহানির বাড়িতে হানা বসে CBI এর।
মূলতঃ আর্থিক ভাবে সম্বল পরিবার থেকে আসা উচ্চ্ শিক্ষিত যুবক রাজু সাহানী কে জালে ফেলার চূড়ান্ত চেষ্টার পর ও তার ৪ টি ঠিকানায় তল্লাশি চালিয়ে কি পাওয়া গেলো ? শুধু মাত্র ৭৫ লক্ষ্য টাকা আর একটি আগ্নেয়াস্ত্র । তারা মনে করেছিলেন যে এখান থেকে কম করে ২০ বা ৩০ কোটি টাকা উদ্ধার হবে, কিন্তু কোথাও যেন নিরাশাই হলেন তারা । কারণ রাজু সাহানি, কমল বা সুবোধ অধিকারী রা তো সোনার চামচ মুখে নিয়েই জন্মেছেন। তারা রাজনীতি তে এসে নয়, তারা আগাগোড়া ই কোটিপতি।
রাজুর পিতা লক্ষ্মণ সাহানি অবশ্যই এই অঞ্চলের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন কিন্তু রাজু সাহানি নিজের আলাদা পরিচয় তৈরি করেছেন। মাত্র ২ বছর ধরে হালিশহর পৌরসভার হাল ধরলে সম্পূর্ণ ভাবে বদলে রেখে দিলেন হালিশহর পৌরসভায় পরিষেবার পরিকাঠামো । মানুষ প্রাকৃত ভাবে উপকৃত তার তৎপরতা ও সক্রিয়তার জেরে। অনেকেই বলছেন তার বাড়ি থেকে ৭০ / ৭৫ লক্ষ্য টাকা বেরোতে কোনো আশ্চর্যের ব্যাপার কোথায় ? তার গোটা পরিবার হলো ব্যবসায়িক।
এবারে রটানো হচ্ছে যে তিনি না কি কোনো বর্ধমান সন্মার্গ নামক চিট ফান্ড কোম্পানির টাকা রেখেছেন। যা সম্পূর্ণ ভাবে উড়িয়ে দিচ্ছেন তার আত্মীয়রা। সেই কোম্পানির ইতিহাস খুলে দেখলে বোঝা যাচ্ছে যে, রাজু সাহানি না সেই কোম্পানির কোনো অংশীদার না মালিক। সেখানে রাজু সাহানি কি ভাবে বেনিফিশিয়ারি হতে পারে ? আবার সোনা যাচ্ছে যে সেই কোম্পানি থেকে না কি ৩০ লক্ষ্য টাকা রাজু সাহানি কে সংরক্ষণের জন্য দেয়া হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কার সংরক্ষণ তা অস্পষ্ট। তবে এই অভিযোগ যদি সত্যি মনে করে CBI তাহলে সুদীপ্ত সেন ও বলেছেন যে শুভেন্দু অধিকারী তার থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়েছেন। সে বিষয় তো CBI নিষ্ক্রিয়।
এবার ৪ঠা সেপ্টেম্বর না কি রাজুর সাথে ঘনিষ্ঠ থাকার দরুন বিজ্পুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর ৩ টি ঠিকানায়, তার ভাই ও কাঁচরাপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারীর এবং তার ছোটো ভাই অমল অধিকারীর ঘরে দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালিয়েও কিছু পেলেন না তারা। যে ভাবে CBI দের সহযোগিতা করেছিলেন রাজু সেভাবেই তাদের সহযোগিতায় দেখা গেলেন সুবোধ ও কমল অধিকারী। শেষ মেশ খালি হাথে ফিরে যেতে হলো CBI আধিকারিকদের। মাথা নিচু করে বেরিয়ে গেলেন তারা, মিডিয়ার কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উঠে গেলেন গাড়ি তে।
তবে সুবোধ, কমল ও অমলের বাড়ি জুড়ে এই প্রান্ত থেকে ওই প্ৰান্তে তল্লাশি করতে গিয়ে অবশ্যই চটি ক্ষয় হয়েছে গোয়েন্দাদের বলে মনে করা হচ্ছে । গত দোষেরা সেপ্টেম্বর রাজু সাহানি কে আটক করে ৩ তারিক ৫ দিনের হেফাজত নেয় CBI টিম। বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে যতই অভিযোগ তুলুক, কিন্তু হেফাজত নেওয়া থেকে আরো ৪৮ ঘন্টা কেটে গেলেও কোনো কিছু রহস্য বেরিয়ে আসলো না, আর গতকাল সেই লিংকে মঙ্গলদ্বীপে CBI এর অসাফল্য ইঙ্গিত দিচ্ছে যে খুব শীঘ্রই রাজু সাহানী ফিরে আসছেন ।