নিউজ ডেস্ক :: ২৪ঘন্টা লাইভ :: ১৪ই,মে::কোচবিহার :: পূর্বসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে কোচবিহার যান রাজ্যপাল। কোচবিহার বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার কথা বলেন। এরপরেই সড়কপথে শীতলকুচির উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। আর গোটা রাস্তাতেই তাঁকে লক্ষ্য করে কালো পতাকা দেখানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়।
দিনহাটায় রাস্তার ধারেই দাঁড়িয়ে কয়েকজন তৃণমূল কর্মী হাতে পোস্টার নিয়ে কার্যত রাজ্যপালকে নিশানা করে গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছিলেন। ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল গাড়ি থেকে সটান নেমে পড়েন। রাজ্যপালকে সামনে দেখে কিছুটা থমকে যান বিক্ষোভকারীরা। রাজ্যপালের প্রশ্ন, এটা কী হচ্ছে? একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ওরাও আমাদের উপরেও হামলা চালিয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে থাকে ক্রমশ। পুলিশ কোনওরকমে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে।
এরপরই রাস্তায় দাঁড়িয়ে আইসির খোঁজ শুরু করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন,’ রাজ্যপালের সামনে এমন হতে পারে? বার বার বলছি আইসি কোথায়? রাজ্যপালের প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘আপনি কোচবিহারের দিকে যাবেন বলে খবর ছিল।’ এরপর রাজ্যপাল বলেন, ‘আপনার কাছে এত অজুহাত রয়েছে। অথচ আইন শৃঙ্খলা মানা হচ্ছে না। পুলিশ ব্যর্থ।
আমার গাড়ি কোথায় যাচ্ছে আপনাদেরও জানা দরকার। গভর্নরের গাড়ি এভাবে আটকানো যায়? আমি মর্মাহত। এটা পরিকল্পিত। আটজন লোকের এত ক্ষমতা? তারা আইন ভাঙছে।’ পরে তিনি আঙুল উঁচিয়ে ধমকও দিয়েছেন দিনহাটার এসডিপিও অমিত বর্মা এবং দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্তকে। এরপর পুলিশ কোনওরকমে বিক্ষোভকারীদের তাড়া করে সরিয়ে দেয়।
বৃহস্পতিবার দিনভর অশান্ত কোচবিহারের বিভিন্ন জায়গা ঘুরেছেন জগদীপ ধনকড়। তাঁর সাংবিধানিক অধিকারের কথা মনে করিয়ে রাজ্যবাসীর সুরক্ষা কতটা, তা সরেজমিনে দেখেছেন। তা নিয়ে ফ্যাসাদও হয়েছে বহু রকমের। বহু জায়গায় রাজ্যপালকে দেখানো হয়েছে কালো পতাকা। দেখানো হয়েছে বিক্ষোভও। তৃণমূল অভিযোগ করেছে, বেছে বেছে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজ্যপাল। তৃণমূল কর্মীরাও আক্রান্ত হয়েছেন, অথচ তা নিয়ে মাথাব্যাথা তাঁর নেই। তবে সেসব সমালোচনায় রাজ্যপাল দমেননি।
আজ সকালেই রওনা দিয়েছেন অসমে। আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে বিএসএফের হেলিকপ্টারে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই সড়ক পথে অসমে যান রাজ্যপাল। অসমের ধুবুড়ি জেলার আগমনিতে যান তিনি। রাঙ্গাপালি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘শরণার্থী’ শিবিরে আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ অভিযোগ, এই রাঙ্গাপালি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই আশ্রয় নিয়েছেন কোচবিহারের বক্সিরহাট, তুফানগঞ্জ, ঝাউকুঠি এলাকার আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরা৷ ধনকড় তাঁদের দ্রুত ঘরে ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। রাজ্যপালকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনেকেই।