স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিমান, দলত্যাগী অংশুমান ।

0
374

24GhontaLive সংবাদদাতা / রাজিব গুপ্তা/ হালিশহর/11 মার্চ:  এবার Facebook এ ক্ষোভ প্রকট করে দলত্যাগী হালিশহর টাউন তৃণমূল এর প্রাক্তন সভাপতি, হালিশহর পৌরসভা ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন পৌর পিতা , হালিশহর পৌরসভার প্রাক্তন পৌর প্রধান, হালিশহর পৌরসভার প্রাক্তন প্রশাসক অংশুমান রায়। এবার তিনি হলেন হালিশহর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সক্রিয় নেতা

সোশ্যাল মিডিয়ায় তার পোস্ট

দীর্ঘদিন ধরে দলের সৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন সাংস্কৃতিক প্রেমী অংশুমান বাবু। কখন সুনাম তো কখন বাদনামি ও অর্জন করেছেন ।  রাজা দত্তের মতন দাপটে নেতা দলে থাকা কালীন ও তিনি ই ছিলেন উচ্চ নেতৃত্বের কাছে স্বচ্ছ ছবির প্রথম পছন্দ। তাই 2009, 10 ও 15 তে পর পর তিন বার পৌরপ্রধান হন হালিশহর এর।  পরবর্তী তে মুখ্য পৌর প্রশাসক হিসেবে ও মনোনীত হন। তিনি থাকা কালীন মানুষ নিশ্চই উপলব্ধি করেছেন তার দ্বারা করা উন্নয়ন, এবং হালিশহর কে সুন্দর করে সাজিয়ে দেওয়া। এক নজরে দেখে হালিশহর পৌরসভার লোকসংস্কৃতি ভবন নবিনিকরণ, ক্রেগ পার্ক সৌন্দর্য্যকরণ, পৌরসভার গেস্ট হাউস সহ পিকনিক গার্ডেন, রামপ্রসাদ ভিটের সামনে কমিউনিটি হল, বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাচ্চাদের খেলার জন্য ছোট্ট ছোট্ট পার্ক নির্মাণ, মিলননগর, হাজীনগর ও হালিশহর চৌমাথাবাজারের প্রবেশ দ্বার নির্মাণ তো বটেই এবং তার সাথে সাথে হালীসহর রাম প্রাসাদ খেলার মাঠ, সবুজ সংঘের মাঠ, বিভিন্ন জায়গায় মন্দির সংস্কার এর মতন উন্নয়ন মূলক কাজ ও করেছিলেন অংশুমান রায়। তবে উন্নয়ন করতে গিয়ে কখন যে কিছু দুর্নীতিবাজ কন্ট্রাক্টর বা প্রোমোটার দের সাথে তার ঘনিষ্টতা হয়ে যায়,  সেটা বোধয় তিনি নিজেও বুঝতে পারেন নি।

বিশেষ করে তার খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন এক কুখ্যাত প্রোমোটার ও দুর্নীতিবাজ জমি মাফিয়া নূর

এই “নূর” হালিশহরের প্রায় শতাধিক পুখুর ভরাট করে ফেলে, তার সাথে নির্মাণ করে ফেলে হালিশহরের ঐতির্য সাধক রামপ্রসাদ এর নামে নির্মিত ও পরিচিত রামপ্রাসাদ ঘাট এর গায়ে লাগোয়া বহুতল।

সাধক রামপ্রসাদের বুকে আঘাত দিয়ে তৈরি বহুতল

স্থানীয় মানুষের আবেগ কে উপেক্ষা করে, যখন 2019 এর লোকসভা নির্বাচনে ব্যস্ত সকল রাজনৈতিক নেতা কর্মী রা।  ঠিক সেই ফাঁকেই অর্থবল ও বাহুবল কে কাজে লাগিয়ে, কোনো রকম নকশা অনুমতি ছাড়াই তৈরী হয় এই বেআইনি ভয়ঙ্কর বহুতল। এই দৃশ্য দেখে  পৌরসভার ওপর ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় মানুষ কিন্তু শাসক দলের দাপটের জেরে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাই নি।কিন্তু ২০১৯ এ লোকসভা তে ক্ষমতা হারায় শাসক দল, এমন কি স্বয়ম অংশুমান রায় গিয়ে যোগদান করেন বিজেপি তে।  ঠিক তখন মুখ খোলেন স্থানীয় মানুষ।

Advertisement

তদন্ত হয় এই ভবনের নির্মাণবিধির।  দেখা যায় যে এই ভবনের কোনো প্ল্যান ই অনুমোদন দেওয়া হয় নি পৌরসভার তরফ থেকে।  আর কাজ বন্ধ করে দেয়া হয় উপ পৌরপ্রধান রাজা দত্তের দ্বারা।

Adv
Adv : Keshari Light House

তবে পরবর্তী তে সেই দুর্দিনে ক্যাপ্টেন হিসেবে দলে ফিরে আসেন সুবোধ অধিকারী, শুরু করেন খেলা , একে একে দলে ফিরিয়ে নেন দলীয় নেতা কর্মীদের তার সাথে হাতছাড়া হয়ে যাওয়া দলীয় কার্যালয় কে ও ।

যখন সুবোধের হাত ধরে পুনরায় দলে ফিরলেন অংশুমান রায়

সুবোধের কৌশলে রাজনৈতিক ময়দানে নাবলেন ঘরে বসে যাওয়া সক্রিয় কর্মীরা। তার মধ্যেই সুবোধের হাত ধরে বিজেপি থেকে দলে ফিরে আসেন অংশুমান রায় ও , সেই যোগদান কর্মসূচি রাখা হলো মঙ্গলদীপ এ।  আবার পৌর প্রধানের পদে আসীন হলেন অংশুমান রায়, ক্ষমতা হারান বিজেপি নেতা রাজা দত্ত। আবার গদি তে আসীন হলেন অংশুমান রায় । আর একবার শুরু হয় উন্নয়নের ধারা, একে একে শুরু হয়ে যায় বন্ধ হয়ে পড়া উন্নয়নের কাজ। তবে উন্নয়নের সাথে নূর এর দুর্নীতি ও হয়ে যায় শুরু।

Advertisement 8240054075

রামপ্রসাদের বুকের ওপর ব্যাথা দিয়ে আবার চালু হয় যায় কাজ । পুনরায় হতাশ হয়ে পড়লেন স্থানীয় মানুষ, কারণ আবার শেষ হলো কথা বলার সুযোগ।  আর তড়ি ঘড়ি করে ফেলে হয় এই নির্মাণ কাজ। রাম প্রসাদের বুকের ওপর এই নির্মাণ দেখেই মনে হয় যে আজ ও এই চরম অন্যায় দেখে অশ্রুজলে ভাসছে সাধকের চোখ। এমন কি নদীর তীরে নির্মিত এই নির্মাণ সংক্রান্ত আজ পর্যন্ত কোনো ছাড়পত্র বা অনুমতি প্রদান করি নি পোর্ট ট্রাস্ট বলেই খবর। কিন্তু জানা গিয়েছে যে বর্তমান পৌরসভা এই প্রোমোটার এর  বিরুদ্ধে ৫ লক্ষ্য টাকার একটি পেনাল্টি নোটিশ ও পাঠিয়েছে।  দেখা গেছে দীর্ঘদিন অংশুমান রায়ের বিশুদ্ধে এই ধরনের দুর্নীতিবাজদের প্রশয় এবং পৌরসভায় নিয়োগ নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ করে মুখর হন তৃণমূলের ই ১১ জন কাউন্সিলর। যাদের বলা হতো TEAM ১১।  তারা অংশুমান রায়ের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ নিয়ে দ্বারস্থ হন জেলা নেতৃত্বের, যেখানে বিষয় টি খুঁটিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়। পরিস্থিতি বুঝে নিজেই সাংবাদিক সম্মেলন করে পাদত্যাগ করলেন অংশুমান রায়।  কিন্তু পরবর্তী তে অংশুমান রায় কে দলীয় ভাবে সরানোর বিষয় সাংবাদিকদের সামনে খোলাসা করলেন জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।  উল্লেখযোগ্য যে গতকাল হালিশহর 15 নঃ ওয়ার্ড, চৌমাথা বাজারে এক ধিক্কার সাভার আয়োজন করাk হয় বীজপুর শহর তৃণমূলের তরফ থেকে। সেখানে দেখা গেলো প্রণব লৌহ, বর্ণা তালুকদার কিন্তু দেখা যাই নি অংশুমান রায় কে।    মনে করা হচ্চহে যে সব কিছু ঠিক থাকলে বীজপুরে শুভ্রাংশু রায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হতে পারতেন অংশুমান রায় কিন্তু এক দিকে সুবোধ অধিকারীর কৌশলে ব্যারাকপুর জুড়ে দল কে মজবুত করার নজির অন্যদিকে নূরের মতন দুর্নীতিবাজ দের কর্মকাণ্ডেই বিপাকে ফেলেছে  অংশুমান রায় কে।  রাজনৈতিক বিশ্লেষক দের মতামত যে এই মুহূর্তে সমস্ত নেতৃত্বে কে রাগ, অভিমান ও প্রত্যাশা থেকে সরে লেগে যাওয়া দরকার নির্বাচনি কাজে।  কিন্তু বীজপুরে আজ দেখা গেলো অন্য দৃশ্য।  যেখানে তাকে নিজের দল তৃণমুলে সসম্মানে ফিরিয়ে দেয়ার কান্ডারি সুবোধ অধিকারী কে সসম্মানে বিধানসভায় পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টার জায়গায় নিজের সম্মান হানির অভিযোগ করে অভিমানী হয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে social মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দল থেকে সরে যাওয়ার বার্তা দিলেন, বিরোধী দলের কাছে খেলার সুযোগ করে দিলেন অংশুমান রায়। এবার দেখার বিষয় আগামী কোন পথে হাঁটছেন অংশুমান এবং কি সিদ্ধান্ত নেবে স্থানীয় নেতৃত্ব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here