সুব্রত দাস :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ২৮শে মে :: চন্দননগর :: করোনা মহামারীর প্রথম ঢেউ থেকেই এই মহামারীকে রোধ করার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে রাজ্য সরকার। আমরা দেখেছি করোনা রোগীকে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি না নিলে অথবা বিভিন্ন হাসপাতালের এই সকল রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা জন্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ঘটনায় বিতর্কের খবর পাওয়া মাত্রই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
তৃতীয়বারের জন্য শপথ গ্রহণের পরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন তার প্রথম পদক্ষেপ হল বাংলাকে করোনা থেকে মুক্ত করা কারণ এই মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ হয়ে উঠেছে আরো মারাত্মক প্রতিনিয়ত বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা আর তার সাথে মৃত্যুর মিছিল। মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা অনুসরণ করে সদা সক্রিয় ভাবে চলছে রাজ্যে করোনা মোকাবেলার কাজ।
বর্তমানে অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতালগুলিতেও চলছে করোনার চিকিৎসা। সরকারি হাসপাতালগুলোতে আগের তুলনায় বেড়েছে অনেক কোভিড বেড এবং ভেন্টিলেশনের সংখ্যা শুধুমাত্র কভিডে মৃত্যুর হার কমানোর কথা মাথায় রেখে। করোনা সংক্রমণের হার কমানোর জন্য রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হয়ে উঠেছে ছোট ও বড় সেফ হোম। কভিড মহামারী দমনের জন্য সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সকল সরকারি হাসপাতালগুলো তার সাথে সাথে বেসরকারি হাসপাতাল গুলিও সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে ।
কিন্তু ,ঠিক এই সময় এক অন্য চিত্র ধরা পড়লো চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা ও শুশ্রূষার অভাবে হাসপাতাল থেকে ফেরার এক করোনা রোগী। অবশেষে রেড ভলেন্টিয়ার দের উদ্যোগে চন্দননগরের গঞ্জের বাজার হইতে উদ্ধার করা হয় সেই রোগীকে এবং পুনরায় চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে আসা হয়।
রোগীর পরিবারবর্গের অভিযোগ গত 14 ই মে মানকুন্ডুর বাসিন্দা বছর 60 মধুসূদন পণ্ডা কভিড পজিটিভ হওয়ায় চিকিৎসার জন্য ভর্তি হন চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে। গত 26 মে বিকেল 4 টার সময় রোগীর পরিবার হাসপাতালের কেবিন এর হেল্পলাইন নাম্বারে ফোন করে রোগীর খোঁজ নিতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর পরিবারকে জানান মধুসূদন বাবু হাসপাতালে নেই এবং তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
তৎক্ষণাৎ রোগীর পরিবার হাসপাতালে ছুটে আসেন এবং রোগীর নিখোঁজ সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে কোনো রকম সদুত্তর দেননি হাসপাতালে ওই ওয়ার্ডের কর্তৃপক্ষ। এরপর তারা হাসপাতালে সুপার ডাক্তার সঞ্জয় কুমার রায়কে অভিযোগ করলেও তারা কোনো সহযোগিতা পাননি সুপারের থেকে। এমনই অভিযোগ করেন মধুসূদন পণ্ডার কন্যা ফাল্গুনী পান্ডার । অবশেষে ফাল্গুনী পান্ডা রেড ভলেন্টিয়ার দের সাহায্যে গতকাল অর্থাৎ 27শে মে চন্দননগরের গঞ্জের বাজার থেকে খুঁজে পায় তার পিতাকে এবং তৎক্ষনাত পুনরায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয় ওই চন্দননগর মহকুমা হাসপাতলে।
এখানেই শেষ নয় ,ফাল্গুনী পান্ডার অভিযোগ তার বাবা হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যাবার পর তার খোঁজ পেয়ে চিকিৎসার জন্য পুনরায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে নতুন করে এডমিট প্রসেস করাতে হয় তার বাবা মধুসূদন পান্ডাকে কোন ডিসচার্জ এর কাগজ দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং ফাল্গুনী দেবী জানান তার বাবাকে ঠিকঠাক চিকিৎসা ও শুশ্রূষা করতো না বলেই তার বাবা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান এমনই অভিযোগ করেন ফাল্গুনী পান্ডা ।
আমাদের 24 ঘন্টা লাইভ এর প্রতিনিধি চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে এই খবর করতে গিয়ে হাসপাতালের সুপার ডাক্তার সঞ্জয় কুমার রায় এর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এই ঘটনা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং তিনি ক্ষিপ্ত মেজাজে কটাক্ষের সুরে আমাদের প্রতিনিধিকে বলেন আপনারা যা ইচ্ছে করতে পারেন।
কিন্তু আমাদের প্রশ্ন সুপার মহোদয় আপনার কাছে ! আমরা কি ই বা করব ? এই মহামারীর দুনিয়াতে করবেন তো আপনারাই সাধারণ মানুষের এতোটুকু চিকিৎসা ও শুশ্রূষা। এটাই তো আপনাদের কাছে সকলের কাম্য ।আর সাধারণ মানুষের এতোটুকু প্রাপ্য অধিকার হইতে বঞ্চিত হলে সেই ঘটনার জনসমক্ষে তুলে ধরাটাই আমাদের কাজ, আমাদের পেশা। এই ঘটনা সামনে আসার পর রোগীদের পরিজনদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় ।
যাইহোক চন্দননগর শহরের একটা সবদিক দিয়ে সুনাম আছে ।কিন্তু এই ঘটনায় দেখিয়ে দিলো কতটা দায়িত্বশীল হাসপাতালের সুপার ডাক্তার সঞ্জয় কুমার রায় এবং তাঁর কর্তব্য নিষ্ঠা ।পরিজনদের দাবি সুপারের এবং কর্তব্যরাত ডাক্তারের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক প্রশাসন ।