BREAKING NEWS :: বিজেপি বিরোধী জোট গড়তে বিরোধী নেতাদের চিঠি মমতার

0
285

বিশেষ সংবাদদাতা :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ৩রা,এপ্রিল :: কোলকাতা :: 

মমতার বিজেপি

বিরোধী জোট ?

বিজেপিবিরোধী জোট গড়ার উদ্যোগ নিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোনিয়া গান্ধী, শারদ পাওয়ারসহ দেশের প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী নেতাকে চিঠি লিখে তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছেন। বিধানসভার  ভোট শেষ হলেই এ বিষয়ে কৌশল ঠিক করা দরকার বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছেন তৃণমূল নেত্রী।

বিরোধী নেতাদের প্রতি ২৮ মার্চ লেখা সেই চিঠি আজ বুধবার প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এতে মমতা লিখেছেন, বিজেপি দেশে একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক শাসন জারি করতে চাচ্ছে। গণতন্ত্র ও সংবিধানের ওপর আঘাত রুখে দেশবাসীকে এক বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প দেওয়ার সময় এসে গেছে।

মমতা লিখেছেন, ভোট শেষ হলেই বিজেপিকে রুখতে সবার একসঙ্গে বসে কৌশল ঠিক করা দরকার। সে জন্য সব সমভাবাপন্ন দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ে তিনি প্রস্তুত।

মমতা এই চিঠি পাঠিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার, ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন, সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, শিবসেনা নেতা ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে, ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী ও জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেন, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল, বিজেডি নেতা ওডিশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক, |
আরও আছে  অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন মোহন রেড্ডি, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির নেতা ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লাহ, পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি এবং সিপিআই (এমএল) নেতা দীপংকর ভট্টাচার্যকে। মমতা এই চিঠি সিপিআই, সিপিএমসহ পশ্চিমবঙ্গের বাম ফ্রন্টের কোনো নেতাকেই পাঠাননি। পাঠাননি বহুজন সমাজ পার্টির নেত্রী মায়াবতীকেও। স্পষ্টতই তিনি এঁদের ‘সমভাবাপন্ন’ মনে করেন না।
বিজেপি কীভাবে দেশে ‘একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক শাসন’ জারি করতে চাইছে এবং বিরোধীদের দুরমুশ করছে, তার বেশ কিছু উদাহরণ মমতা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। শুরুই করেছেন সম্প্রতি পাস করা আইনের উল্লেখ করে, যাতে দিল্লির উপরাজ্যপালকে নির্বাচিত সরকারের অঙ্গ করা হয়েছে। এই আইনে বলা হয়েছে, নির্বাচিত সরকারকে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে হবে উপরাজ্যপালের মতামত নিয়ে। মমতার কথায়, নির্বাচিত সরকারের ওপর কেন্দ্র মনোনীত উপরাজ্যপালকে চাপিয়ে দিয়ে বিজেপি সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চাইছে। কারণ, তারা কোনোরকম বিরোধিতা সহ্য করতে পারছে না। মানতে পারছে না সেই দলকে, যারা ২০১৪ ও ২০১৯ সালে বিজেপিকে হারিয়ে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠ হয়ে দিল্লিতে সরকার গড়েছে।

বিজেপির ‘গণতন্ত্র হত্যা’ ও ‘সংবিধান লঙ্ঘনের’ সাতটি উদাহরণ মমতা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, রাজ্যপালকে দিয়ে তারা একের পর এক বিরোধীশাসিত রাজ্যকে বিরক্ত করে চলেছে। রাজভবনকে করে তুলেছে দলীয় দপ্তর। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করছে সিবিআই, ইডির মতো সরকারি সংস্থাকে। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যে যেখানে ভোট চলছে, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস ও ডিএমকের নেতাদের বিরুদ্ধে ইডিকে দিয়ে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে।

বিরোধীশাসিত রাজ্যের ন্যায্য পাওনা টাকা ইচ্ছে করে আটকে রেখেছে, যাতে রাজ্যে উন্নয়ন থমকে যায়। জাতীয় উন্নয়ন পর্ষদ, আন্তরাজ্য পর্ষদ, যোজনা কমিশন বাতিল করে দিয়েছে,যেখানে রাজ্য সরকারেরা তাদের দাবি পেশ করতে পারত। সন্দেহজনক সূত্র থেকে বিজেপি বিপুল অর্থসম্পদ আদায় করছে, যা দিয়ে তারা বিরোধী সরকারের পতন ঘটাচ্ছে। অ-বিজেপি দলগুলোয় ভাঙন ধরাচ্ছে। তারা শুধু রাষ্ট্রায়ত্তই করছে না, বিক্রিও করে দিচ্ছে। কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক তো অবশ্যই, বিরোধীদের সঙ্গে কেন্দ্রের শাসক দলের সম্পর্ক এতখানি তলানিতে আগে কখনো পৌঁছায়নি। এর জন্য সমানভাবে দায়ী প্রধানমন্ত্রীর স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ।

বিরোধী নেতাদের উদ্দেশে মমতা লিখেছেন, এসবের একটাই লক্ষ্য। সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়ে বিরোধীদের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলা। নির্বাচিত রাজ্য সরকারের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে তারা সেগুলোকে পুরসভায় পরিণত করতে চায়। এককথায়, তারা গোটা দেশে একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক শাসন জারি করতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে একজোট হয়ে কার্যকর সংগ্রাম গড়ে তোলাই সময়ের দাবি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here