কালীঘাটে পদ্ম ফোটানোর দিনক্ষণ সবই ঠিক হয়ে আছে বলছে নিন্দুকেরা – কিন্তু এইসব ভিভিআইপিদের দলে ঢোকানোর বোঝা বইবে তো বিজেপি ?

0
250

রাজীব গুপ্তা :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ১৫ই,জানুয়ারি ::কলকাতা :: 

মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নাকি শুধু সময়ের অপেক্ষা।তাঁর পরিচিতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই হিসেবে। এছাড়াও তাঁর অন্য

পরিচিতিও আছে। একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত তিনি। তৃণমূলের আজাদহিন্দ ব্রিগেডের দায়িত্বেও রয়েছেন তিনি।

এ হেন কার্তিক বাবু বিবেকানন্দের জন্মদিনে হঠাৎ করেই বেসুরো তান ধরলেন । তিনি বর্তমান রাজনীতিকে কটাক্ষ করে বলে বসলেন মুখে দেশের দশের কথা বলব আর নিজের পরিবারকে সুযোগ সুবিধা দেব, এটাই রাজনীতি ? খোদ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ভাইয়ের মুখে এমন কথা শুনে তৃণমূল হাই কমান্ড বলে বসলো কার্তিক বন্দোপাধ্যায়ের সাথে আমাদের দলের কোনো যোগাযোগ নেই ।

কিন্তু তা বললেই কি হবে ? সাম্প্রতিক তৃণমূলের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যাবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের তরফে আজাদ হিন্দ ব্রিগেড তৈরির কথা ঘোষণা করেছিলেন। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে । সেই দায়িত্ব এখন কার হাতে সে ব্যাপারে অবশ্য তৃণমূলের তরফে কিছুই জানানো হয়নি।

সাম্প্রতিক রাজনীতির প্রেক্ষিত কিন্তু অন্য কথা বলছে । বিজেপিতে যোগ দিয়েই শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন শুধু নিজের বাড়িতেই নয়, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটেও তিনি পদ্ম ফোটাবেন। এরই মধ্যে নিজের ছোট ভাই সৌমেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে পদ্ম ফুটতে বাকি আছে।আর তাই নিয়েই অন্দরে অন্দরে বাংলার রাজনীতি সরগরম ।

অন্দরে অন্দরে এই জন্য বলছি কারণ একদিকে যেমন কার্তিক বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের রাজনীতি একটা ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি করেছে তেমনই কিন্তু একই সময়ে বিজেপির অন্দরেও চলছে নানান টানাপোড়েন । এই যে রোজই দল ভাঙিয়ে নিত্যনতুন মানুষকে বিজেপির অন্দরে ঠাঁই করে দেওয়া এতে কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজ্য সভাপতি হিসাবে দিলীপ ঘোষকেই সামাল দিতে হবে ।

কদিন আগেই বিজেপির এক নেতা বলেছেন যে ক্ষোভ আর আর লোভের বিমারিতে ভুগছে । আর তার ওষুধ আছে বিজেপির কাছে । যদি ধরেই নেওয়া যায় যে এই দুই উপসর্গকে ভাঙিয়ে বিজেপি বাংলার গদিতে বসতে চাইছে তাহলে হয়তো খোদ বিজেপিকেই তার মূল্য চোকাতে হবে ।

অভিজ্ঞ দিলীপ বাবু তাই এই মুহূর্তে এই দল ভাঙানোর খেলায় প্রায় তিতিবিরক্ত হয়ে গেছেন । ইতিমধ্যেই কিন্তু দিলীপ বাবুর সাথে শুভেন্দু অধিকারীর একটা ঠান্ডা যুদ্ধ সম্ভবত শুরু হয়ে গেছে । একটা সাম্প্রতিক উদাহরণ দিই । শোভন – বৈশাখী জুটিকে বসার জায়গা করে দিতে রাজ্য দপ্তরে মুকুলরায়ের চেম্বারটাই শোভন বৈশাখী জুটির নাম বরাদ্দ করে দেওয়া হলো । মুখে কিছু না বললেও কিন্তু মুকুলবাবুর এই ঘটনা নিশ্চয়ই ভালোলাগার কথা নয় ।

Advertisement

এমনিতেই কিন্তু মুকুল রায় যে উৎসাহ নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সেই উচ্ছাস কিন্তু আজ আর নেই । এই রকম আরও উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে তবে মোদ্দাকথা হচ্ছে আগামী দিনে কিন্তু আদি এবং নব্য বিজেপির মধ্যে একটা দ্বন্দ প্রকট হয়ে উঠবে আর সেই সময়টাই কিন্তু বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের পক্ষে একটা অগ্নিপরীক্ষার সময় হয়ে উঠতে পারে ।

Advertisement 8240054075

আজ যাঁরা নতুন আশা নিয়ে পদের লোভে দল ভেঙে বিজেপিতে যাচ্ছেন এই মুহূর্তে কিন্তু তারাই দলে ঢুকে লাঠি ঘোরাচ্ছে আর সেটাই না পসন্দ আদি বিজেপি কর্মীদের । তাই স্বয়ং মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ঘরে পদ্মফুল ফুটলেও কিন্তু বিজেপি দলের কাজের কাজ কিছু হবেনা ।

Adv
Adv : Keshari Light House

আজ যদি শুভেন্দু অধিকারী,শিশির অধিকারী,ও অধিকারী ব্রাদার্সকে সামান্য ক্যাডার হয়ে থাকতে হয়,যদি রাজীব বন্দোপাধ্যায়,লক্ষী রতন শুক্লা কিংবা উত্তরবঙ্গের গৌতম দেবরা বেসুরো বলে তাদের দলে নিয়ে ফেলতে হয় তাহলে তাঁদের ভবিষ্যতে সন্মানীয় পুনর্বাসন দিতে পারবে তো বিজেপি ? তাই কবিগরুরু কথায় বলতে হয় “এতো খেলা ভাঙার খেলা” ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here