রাজীব গুপ্তা :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ৮ই,মে :: কোলকাতা :: কয়েকদিন ধরেই বিজপুরের আকাশে বাতাসে ছড়াচ্ছে জল্পনা – কোন পথে রায় পরিবার আর কোনপথেই বা রাজীব বন্দোপাধ্যায় ? অনেকের দাবি, হয়তো দল ছাড়তে পারেন পোড়খাওয়া এই রাজনীতিবিদ। এবিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য না করলেও মঙ্গলবার দিলীপ ঘোষের ডাকা বৈঠকে মুকুল রায়ের অনুপস্থিতি উসকে দিল সেই জল্পনা। এবিষয়ে মুখ খুলেছেন দিলীপ-মুকুল উভয়েই।
মঙ্গলবার কলকাতার হেস্টিংসের কার্যালয়ে একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্য পদাধিকারিদের সেখানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। অনেকেই ভারচুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন তাতে। তবে মঙ্গলবারের সেই বৈঠকে দেখা যায়নি মুকুল রায়কে। তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শুরু হয় সমালোচনা। দলের সঙ্গে সম্পর্ক যে আর আগের মতো নেই সেই ইঙ্গিত দিতেই কি বৈঠকে যোগ দিলেন না মুকুল? সেই প্রশ্নও ওঠে।
এই বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক মুকুল রায় একটি সংবাদমাধ্যমে বলেন, “এসবের মধ্যে আমি নেই। কোনও বৈঠকের কথা আমি জানি না।” তাঁর এই মন্তব্য উসকে দেয় বিতর্ক। পালটা দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, প্রত্যেকের মতোই মুকুল রায়কেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে তিনি আসার আশ্বাসও দিয়েছিলেন।
বর্তমানে রায় পরিবার যে টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাতে মুকুলবাবুর মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ দিলীপ। তিনি বলেন, “মুকুলবাবুর স্ত্রী অত্যন্ত অসুস্থ। ওনারা বর্তমানে সমস্যার মধ্যে রয়েছেন।” উল্লেখ্য, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মুকুলবাবুর স্ত্রী কৃষ্ণা রায়কে দেখতে হাসপাতালে যাওয়ার পর থেকে ওই পরিবারের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ পুরনো ফর্মে দেখা যাচ্ছে না মুকুল-শুভ্রাংশু, কাউকেই। বরং উলটো সুর দু’জনেরই মুখে। তবে কি মুকুল রায়ের তৃণমূলে ফেরা শুধুই সময়ের অপেক্ষা? সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
অন্যদিকে বেসুরো হয়েছেন রাজীব বন্দোপাধ্যায়ও । তিনিও আজকের মিটিঙে অনুপস্থিত ছিলেন ।কিন্তু সেই বৈঠকের অব্যবহিত পরেই নেটমাধ্যমে বেসুরে গাইতে শুরু করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার যখন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কলকাতায় দলের বৈঠক করছেন, তখন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রয়েছেন দিল্লিতে। সেখানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর তিনি জানিয়েছেন, বাংলায় ভোট-পরবর্তী হিংসা যেখানে পৌঁছেছে, তা ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করার পক্ষে যথেষ্ট।
বস্তুত, একধাপ এগিয়ে শুভেন্দু জানিয়েছেন, রাজ্যের যা পরিস্থিতি, তাতে ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ না করলেই আশ্চর্য ! তার পরেই রাজীব তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে ৩৫৬ ধারার জুজু না দেখিয়ে কোভিড ও ইয়াস মোকাবিলায় বাংলার মানুষের পাশে থাকা উচিত’।
রাজীবের ওই পোস্ট প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেননি শুভেন্দু। রাজ্য বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেছেন, রাজীব এখনও তাঁদের দলের সদস্য। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে দল কথা বলবে। প্রসঙ্গত, নেটমাধ্যমে ‘মর্জিমাফিক’ পোস্ট আটকাতে মঙ্গলবারেই একটি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তৈরি করেছে রাজ্য বিজেপি। রাজীবের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ওই কমিটি কোনও ব্যবস্থা নেয় কি না, সেটাই দেখার। তবে বিজেপি-র একাংশের অনুমান, ব্যবস্থা নিলে রাজীবের সুবিধাই হবে। তাতে ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিজেপি-র সঙ্গে তাঁর ‘দূরত্ব’ আরও প্রকট হবে। যা পক্ষান্তরে তাঁকে তৃণমূলের সঙ্গে নৈকট্য রচনায় সাহায্য করবে।
এই প্রসঙ্গে দিলীপ বাবুর বক্তব্য রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপারটি তাঁরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জানবার কথা ভাবছেন । এহেন অবস্থায় একদিকে যখন তৃণমূল ইয়াশ এবং ভ্যাকসিন নিয়ে বিব্রত ঠিক তখনই রাজ্যের বিরোধী দোল হিসাবে রাজ্যের পাশে না দাঁড়িয়ে এখন রাষ্ট্রপতি শাসনের কথা ভাবছে । জনতার দাবি বিরোধীদের ওপর হামলা বন্ধ হোক আর বিরোধীরাও তাঁদের কর্তব্য বিরোধী হিসেবে পালন করুন তাহলে দুতরফেরই রাজধর্ম পালন করা হবে ।।