আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ৩০ শে জুলাই :: কোলকাতা :: শিক্ষা নিয়ে বারবার নতুন পরীক্ষা নিরীক্ষায় জেরবার আম ভারতের পড়ুয়ারা । আগেকার ১০+১+ ৩ বদলে হয়ে গেলো ১০+২+৩ অর্থাৎ মাধ্যমিক + উচ্চ মাধ্যমিক + স্নাতক কোর্স । এই পুরো প্রণালীটারই খোল নলচে বদলে দিয়ে এবার হিউম্যান রিসোর্স মন্ত্রক আবার ফিরলো পুরোনো শিক্ষা মন্ত্রকেই । অর্থাৎ এবার এইচ আর মন্ত্রী এখন থেকে হবেন শিক্ষা মন্ত্রীই।
৩৪ বছর পর ভারত পেল ফের এক নতুন ন্যাশনাল এজুকেশন পলিসি। এই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি একাধিক পরিবর্তন এনেছে দেশে। শুধুমাত্রা স্কুল শিক্ষাই নয়, উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও একাধিক বদল এনেছে এই শিক্ষানীতি।
যে শিক্ষা ব্যবস্থা দেশ আগে দেখে এসেছে, তাতে ১০+ ২ ছিল শিক্ষা ব্যবস্থার কাঠামো। সেই কাঠামো পরিবর্তন হয়ে এবার হল ৫+৩+ ৩+৪। যে শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে ভারতে তার সঙ্গে আরও ৩ টি বছর যোগ হয়েছে। কোথাও পাঠ দানের পদ্ধতি কোথাও পাঠক্রমের ঘরানায় এবার আমূল পরিবর্তন আনতে চসেছে মোদী সরকার।
যে চেনা ছকে এতকাল পড়োশোনা হত দেশে ,তা পাল্টাতে চলেছে। শিক্ষা সচিবের বক্তব্য অনুযায়ী, যে পড়ুয়া রসায়ন ভালোবেসে পড়ে,সে চাইলে ফ্যাশন টেকনলজিকেও বিষয় হিসাবে নিতে পারবে। আগে কলা, বিজ্ঞান, কমার্স এই তিন ভাগে ক্লাস ১১-১২ এ পড়াশোনা হত। এখন তা পাল্টাচ্ছে।
মাল্টিপল এন্ট্রি ও এক্সিট সিস্টেম অনুযায়ী, কেউ উচ্চশিক্ষাস্তরে যদি কোনও কারণে মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেয়, তাহলে সেই জায়গা থেকে আবার সে পড়াশোনা পড়ে শুরু করতে পারে। শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রথম এক বছর সম্পূর্ণ করলে সার্টিফিকেট কোর্স, ২ বছরে ডিপ্লোমা, ৪ বছরে ডিগ্রি।
সমস্ত স্কুলে আগামী দশকে দফায় দফায় বৃত্তি পরীক্ষা হবে।মাতৃভাষাতে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত শিক্ষা চলবে। স্কুলের পড়াশোনা বিষয়ভত্তিক ভাবধারার মধ্যে আবদ্ধ থাকবে। শুধুমাত্র নম্বর দিয়েই ছাড়া যাবে না। পড়ুয়াদের স্কিলের হিসাবে একটি সঠিক রিপোর্ট কার্ড বানাতে হবে। স্কুলের রিপোর্ট কার্ডে সহপাঠিরাও মূল্যায়নের মার্কস বন্ধুদের দেবে। শিক্ষক ছাড়াও পড়ুয়া নিজে মূল্যায়ন করবে নিজের পারফরম্যান্স।
পড়ুয়াদের জন্য তৈরি হবে অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিট। শুরু হবে ৫ বছরের ইন্টিগ্রেটেড স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তর। পাশাপাশি উঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এম ফিল। গবেষণায় ইচ্ছুক পড়ুয়ারা চার বছরের ডিগ্রি কোর্স পড়তে পারবে।এখনো পর্যন্ত মনে করা হচ্ছে যে যতদিন পর্যন্ত না এই ব্যবস্থা প্রয়োগের মধ্যে আসবে ততদিন কিন্তু এর ভেতরের ত্রুটি বাইরে আসবে না। সে কথার তো সময়ই উত্তর দেবে কিন্তু একটা সরকারি নজির কিন্তু দৃষ্টি কেড়েছে আমি ভারত বাসীর।
আচমকাই করোনা আবহে সিলেবাস কমানোর নামকরে কর্ণাটকের প্রাথমিক শিক্ষার সিলেবাস থেকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল হায়দ্রাবাদের নিজামদের ইতিহাস। এর পরই সমালোচনার ঝড় উঠে যায় এবং জনতার রোষের সামনে ঝুঁকতে হয় কর্ণাটক সরকারকে। এই সব দেখে কিছু বিশেষজ্ঞের মনে গৈরিকীকরণের ভীতির সঞ্চার হয়েছে। এখন দেখার প্রকৃতই কি ঘটতে যাচ্ছে শিক্ষা জগতে।