নিজস্ব সংবাদাতা :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ২৬শে মে :: কোলকাতা :: করোনা ও আমফান বিপর্যয়ের মধ্যে ভারতের খাদ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাকে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে ফেলে উত্তর প্রদেশের দিকে এগোচ্ছে রাজস্থানের মরুভূমির দল ।ভারতের মধ্যপ্রদেশে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ছে পঙ্গপালের দল। গত ২৭ বছরের মধ্যে উত্তরপ্রদেশে বৃহত্তম পঙ্গপালের আক্রমণ হতে চলেছে,এবং বর্ষা না আসা পর্যন্ত এই সংকট বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
রাজস্থানের বেশ কয়েকটি জায়গায় সবজি এবং ফসল ও গাছ ধ্বংস করার পরে মরুভূমির পঙ্গপালগুলি মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহের নির্বাচনী এলাকা বুধনিতে প্রবেশ করেছে। পঙ্গপাল রাজ্যের নিমুচ জেলা দিয়ে প্রবেশ করেছে, পরে মালওয়া নিমারের কিছু অংশ পাড়ি দিয়ে এখন ভোপালের কাছে রয়েছে এই ঝাঁক।
রাজস্থানের রাজ্য কৃষি বিভাগ ক্ষতিগ্রস্থ জেলাগুলির কৃষকদের পঙ্গপালের উপর ক্রমাগত নজরদারি রাখতে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে। ঢোলের মাধ্যমে জোরালো শব্দ ব্যবহার করে, থালা–বাটি বাজিয়ে এবং চিৎকার চেঁচামেচি করে কীটপতঙ্গগুলিকে দূরে রাখতে বলা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৯টার মধ্যে পঙ্গপালের দল বিশ্রামের জন্য যে কোনও জায়গায় থামতে পারে। কৃষকদের সতর্ক থাকতে এবং পতঙ্গদের চলাচল পর্যবেক্ষণ করতে বলেছেন কর্মকর্তারা।
আফ্রিকা’ থেকে বালুচিস্তান হয়ে ভারতের রাজস্থান। ছোট্ট পাখায় ভর করেই দল বেঁধে কয়েক হাজার মাইল পথ পাড়ি। ভয়ংকর হয়ে ওঠা পতঙ্গের পাল জয়পুরে তাণ্ডব চালিয়ে ঢুকে পড়েছে মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশেও। হোয়াট নেক্সট ? গো বলয়ের পর পঙ্গপাল বাহিনী নাকি বাতাসের গতিপথ বেয়ে পূর্ব দিকে সরতে শুরু করেছে। ঝড়খণ্ড পর্যন্ত নাকি চলেও এসেছে ! তবে, কি পঙ্গপালদের পরবর্তী গন্তব্য গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ?
চিন্তায় আকুল বাংলার পতঙ্গবিদরা। কারণ, এই অ্যাক্রিডিডেই প্রজাতির এই পঙ্গপালের প্রজননের জন্য যে অনুকূল পরিবেশ দরকার, তা এখন আমফানের সৌজন্যে পশ্চিমবঙ্গে মজুত। সুতরাং বাংলার ভিজে মাটি, গঙ্গাপাড়ের হাওয়া, মাঠভরতি ফসল, সব মিলিয়ে সুজলা–সুফলা বাংলা ‘অটোমেটিক চয়েস’ হতেই পারে। এমনটাই মনে করছেন বিশিষ্ট পতঙ্গবিদরা। তাঁদের মত, এই পরিযায়ী পতঙ্গ বাহিনী যে গতিতে উড়ছে তাতে বাংলা কেন, ভারতের যে কোনও রাজ্যে এরা পৌঁছে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। সুতরাং সাবধান হতেই হবে ।
প্রশাসনও বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। রাজ্যের পতঙ্গবিদরা পঙ্গপালের গতিবিধির উপর নজর রাখছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ’৬১ সালে কলকাতায় একবার পঙ্গপাল হানা দিয়েছিল। ঝাঁকে ঝাঁকে পতঙ্গের দল মেঘের মতো কালো হয়ে প্লেনের মতো ভোঁ ভোঁ শব্দ করতে করতে মহানগরে ঢুকেছিল।
আর তেমন কোনও তথ্য নেই। তাই, এদের সামলানোর জন্য পর্যাপ্ত হোমওয়ার্ক চাই। যা করোনা ও আমফান বিধ্বস্ত বাংলার প্রশাসনের পক্ষে বেশ মুশকিল। তাই, দুশ্চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে বাংলার কৃষকদের। রাজস্থানের জয়পুরের মতো এখানেও যদি হানা দেয় পঙ্গপাল! নষ্ট করে ফেলে ফসল! সিঁদুরে মেঘ দেখছে জঙ্গলমহল। কারণ, ঝাড়খণ্ড থেকে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর হয়েই ঢোকার কথা এই পরিয়াযীদের। সেক্ষেত্রে বিঘের পর বিঘে ছিবড়ে করে ফেলবে।
এই মাত্র খবর পাওয়া গেছে কোলকাতার কালিকাপুরের আকাশে দেখা পাওয়া গেছে পঙ্গপালের দলের ।