সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে গোপন আলোচনা চলছে – জয়শঙ্কর

0
274

আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: ২৪ঘন্টা লাইভ :: ১৭ই,অক্টবর :: নয়াদিল্লি :: সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে কিছু গোপন আলোচনা চলছে। সেই আলোচনা নিয়ে এখনই কোনো ভবিষ্যদ্বাণী নয়। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গতকাল বৃহস্পতিবার এ মন্তব্য করেছেন। সীমান্ত উত্তেজনা নিরসনে গত বুধবার দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সপ্তম দফার আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। তার পরদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করে বলেন, ‘আলোচনা এখনো শেষ হয়নি। ওয়ার্ক ইন প্রোগ্রেস। আমার নীতি হলো, যা চলমান তা নিয়ে আগাম মন্তব্য ঠিক নয়।’

গত জুন মাসে পূর্ব লাদাখে ভারত-চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর গলওয়ান অঞ্চলে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে। তাতে ভারতের ২০ জন জওয়ান নিহত হন। আহতের সংখ্যা ১০০ ছুঁই ছুঁই। চীনের তরফেও বহু হতাহত হলেও তারা তা স্বীকার করেনি। সেই থেকে সীমান্ত উত্তেজনা অব্যাহত। আগস্টের শেষ ও সেপ্টেম্বরের গোড়াতেও গুলি চলেছে। কিন্তু তবু সামরিক, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক—তিন পর্যায়েই দুই দেশ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও ভারতের দাবিমতো চীন এলএসিতে তাদের জুন–পূর্ববর্তী অবস্থানে ফিরে যায়নি।

এ অবস্থায় গত বুধবার সেনাবাহিনী স্তরে সপ্তম দফার আলোচনা অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার ব্লুমবার্গ ইন্ডিয়া ইকোনমিক ফোরামে অংশ নেন জয়শঙ্কর। সেই অনুষ্ঠানে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে জয়শঙ্কর নানাভাবে বিষয়টি এড়িয়ে যান। বিস্তারিতভাবে কিছু না বলে তিনি প্রথমে বলেন, ‘আলোচনা অব্যাহত। চীনকে নিয়ে কোনো আগাম মন্তব্য নয়।’ পরে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে এমন কিছু কথা চলছে, যা গোপনীয়। দেখা যাক, তাতে কোনো কাজ হয় কি না। কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা ঠিক নয়।’

ভারত-চীন সীমান্ত বিবাদ দীর্ঘদিনের। কিন্তু তা সত্ত্বেও সাড়ে চার দশক ধরে এলএসিতে রক্ত ঝরেনি। গুলি চলেনি। মৃত্যু তো দূরের কথা। জুন মাসে সেটাই হয়। সেই থেকে লাদাখ নিয়ে চীনের উত্তেজক বিবৃতি আজও অব্যাহত। গত বছর আগস্টের ৫ তারিখ জম্মু-কাশ্মীরের দ্বিখণ্ডীকরণ, রাজ্য ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন এবং সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল চীন মেনে নেয়নি। একাধিকবার চীন তা ভারতকে বুঝিয়ে দিয়েছে।

সম্প্রতি তারা কেন্দ্রশাসিত লাদাখ নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে। দীর্ঘদিন বন্দী থাকার পর মুক্তি পেয়ে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাও বলেছেন, অন্যায় ও অসাংবিধানিকভাবে কাশ্মীরিদের অধিকার হরণ করা হয়েছে। ভারতও বারবার জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ভারতের বিষয় নিয়ে মন্তব্য করার কোনো অধিকারই চীনের নেই।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, চীনের আগ্রাসী আচরণের কারণ ভারতের কাশ্মীর নীতি। এ কারণেই ভারত এমন কোনো ধারণা সৃষ্টিতে রাজি নয় যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ফলপ্রসূ হলে চীন তার আগ্রাসী ভূমিকায় রাশ টানবে। জয়শঙ্কর তাই বলেছেন, বেইজিং নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here