নিজস্ব সংবাদদাতা :: ২৪ঘন্টা লাইভ :: ২৮শে আগস্ট :: শিলিগুড়ি :: পশ্চিমবঙ্গের সাতটি জেলা নিয়ে আলাদা কামতাপুর রাজ্য গড়ার দাবি আগেই তুলেছিল নিষিদ্ধ ও সশস্ত্র সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অরগানাইজেশন (কেএলও)।
এবার স্বাধীন কামতাপুর রাষ্ট্রের দাবি তুলেছে তারা। দাবি না মানলে রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন চালানোর হুমকিও দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার কেএলওর প্রধান জীবন সিংহের পক্ষ থেকে এক ভিডিও বার্তায় এমন দাবি তোলা হয়।কেএলও–প্রধানের পক্ষ থেকে ভিডিও বিবৃতিটি পাঠ করেন সংগঠনটির নেতা পাভেল কোচ। সেখানে বলা হয়, উত্তরবঙ্গের সাতটি জেলা, বিহার রাজ্যের কিষাণগঞ্জ অঞ্চল, আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা, নেপালের কিছু অংশ এবং বাংলাদেশের রংপুর জেলার কিছু অংশ নিয়ে তারা স্বাধীন কামতাপুর রাষ্ট্র গঠন করবে।
ইতিহাসে উল্লেখ থাকা কোচবিহার রাজ্যের যে সীমানা ছিল, তা মেনেই কামতাপুর রাষ্ট্র গঠন করা হবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বর্তমানে সংগঠনটির প্রধান শত্রু হিসেবে ভারতের নাম উল্লেখ করেছে কেএলও। কেএলও একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি সংগঠন হিসেবে পরিচিত। গোপনে তৎপরতা চালানো এই দলটিকে ভারত সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
এর আগে গত ১৯ জুন পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা রাজ্যটির উত্তরাঞ্চলের সাতটি জেলা নিয়ে আলাদা রাজ্য গড়ার কথা সামনে আনেন। অঞ্চলটি বহুদিন ধরেই বঞ্চনার শিকার হয়েছে উল্লেখ করে আলাদা ‘উত্তরবঙ্গ’ রাজ্যের আর্জি জানান তিনি। তবে সেই দাবি নাকচ করে দেয় বিজেপির রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
এক দিন পর ২১ জুন পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুরা জেলার বিষ্ণুপুর আসনের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ‘জঙ্গলমহল’ নামের একটি রাজ্য গড়ার দাবি জানান। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া, বাঁকুরা, পশ্চিম মেদিনীপুর আর ঝাড়গ্রাম জেলার বিস্তৃর্ণ জঙ্গল এলাকা জঙ্গলমহল নামে পরিচিত। এই জঙ্গলমহলকে তুলনামূলক অনুন্নত এলাকা হিসেবে ধরা হয়। সৌমিত্র খাঁর ভাষ্য, মণিপুর ও মিজোরাম ছোট রাজ্য হিসেবে উন্নয়ন করছে। তবে উন্নয়নের জন্য জঙ্গলমহল রাজ্য হবে না কেন?
বিজেপি সাংসদদের আলাদা রাজ্য গড়ার দাবির বিরোধিতা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস ও বামদলের নেতারা। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে। কোনোভাবেই বাংলা ভাগ হতে দেবেন না। এসব দাবি খারিজ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এদিকে দার্জিলিং ভেঙে আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্য গড়ার দাবি তুলেছে গোর্খা লীগ। আশির দশকে গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে জিএনএলএফ নেতা সুভাষ ঘিসিং প্রথম আন্দোলন শুরু করেন। এরপর প্রায় চার যুগ কেটে গেলেও পুরোপুরি শান্তি ফিরে আসেনি। একই ধারায় গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলন এখনো চলছে।