নরেশ ভকত :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ২১শে নভেম্বর ::বাঁকুড়া :: সূর্যোপাসনা এক প্রাচীন হিম্দু পার্বন। কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। এক সময় বিহার, উত্তপ্রদেশ, তরাই অঞ্চলে এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। পরবর্তীকালে সারা বিশ্বে প্রবাসী ভারতীয়দের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।ছটপূজা অর্থাৎ ছটী মাঈয়া পূজা। ঊষা ও সূর্য্যের পুর্ণমিলনের সন্ধিক্ষণ এই শুক্লপক্ষের ষষ্ঠী তিথির সূর্য্যাস্তের সময়কাল।
ছটপূজায় কোনো প্রতিকীত মূর্তি আরাধনা করা হয় না। স্বয়ং অস্তগামী সূর্য্যেকে নিজ আত্মার আন্তরীকরণে শুদ্ধমনে নিজেকে নিবেদন করা হয়। এই পূজা কোন সময় থেকে প্রচলন হয় তা জানা যায় নি।তবে পৌরানিক মতে ছটপূজার মতো সূর্য্যপূজার পূজার প্রচলন রয়েছে। মহাভারতে উল্লেখিত পান্ডু ঋষি হত্যার প্রায়শ্চিত করার জন্য সূর্য্যপূজা করতেন। দ্রৌপদী সূর্য্যপূজা করে অক্ষয় প্রাপ্ত হয়। মহাবীর কর্ণ কোমর পর্যন্ত জলে নেমে সূর্য্যপূজা করতেন।রামায়ণে রামচন্দ্র ও সীতা সূর্য্যের পূজা করেছে।
এই উপাসনায় ছটী মাইয়ার কোলে কিছু থাকা অবস্থা কল্পনা করলে পুত্র প্রাপ্তির সংযোগ ঘটে। চারদিন ধরে চলে এই পূজার প্রস্তুতি। প্রথমদিন ব্রতচারীগণ বাড়িঘর পরিস্কার করে স্নানের পর নিরামিস আহার করেন। দ্বিতীয় দিন থেকে উপবাস শুরু হয়।তৃতীয় দিনে নদী বা পুষ্করিণিতে অন্যান্য ব্রতীদের সাথে অস্তগামী সূর্য্যকে অর্ঘ্য ও মধু অর্পণ করা হয়। ব্রতের শেষদিনে অন্যান্যদের সাথে আবার নদীর ঘাটে উদিয়মান সূর্য্যকে শুদ্ধমনে অর্ঘপ্রদান করে উপবাস ভঙ্গ করা হয়। ছটী মাইয়ীর এই পার্বণ উপল্লখে বাঁকুড়া ও বর্ধমান জেলার মানুষ মেতে উঠেছে।
আজ গোটা দেশের সাথে সাথে বড়জোড়া দুর্গাপুর শিল্পঞ্চলের হিন্দিভাষী মানুষরা ছট পুজোতে মেতে উঠেছেন। দুর্গাপুর ব্যারেজের দামোদর নদী ঘাটগুলিতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় ছিল । করোনা আবহ হলেও ভিড়ের কমতি ছিল না। পূন্যার্থীরা বলেন , ছট পুজো তাদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র উৎসব। প্রতিবছর আমরা আসি। এ বছর করেনার জন্য চিন্তায় ছিলাম, তবুও আমরা আসতে পেরেছি ।