দুই মহিলা তৃণমূল কর্মীর মধ্যে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে বচসার জেরেই একজনের বাড়িঘর ভাঙচুর

0
169

কুমার মাধব ::২৪ঘন্টা লাইভ ::২৮ই জুন ::মালদা :: দুই মহিলা তৃণমূল কর্মীর মধ্যে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে বচসা।আর সেই বচসার জেরেই একজনের বাড়িঘর ভাঙচুর করে মারধর এবং লুটপাটের অভিযোগ উঠলো অন্য তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। কিন্তু আক্রান্ত কর্মীর পাশে এখনো পর্যন্ত এসে দাঁড়ায়নি দলের কোনো নেতৃত্ব। আক্রমণকারীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ছোট পারো গ্রামে।

ওই গ্রামেরই বাসিন্দা টুম্পা খাতুন। স্বামী নুর আলম পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে ভিন রাজ্যে কর্মরত। তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে বাস করেন ঐ মহিলা। দিন আনা দিন খাওয়া সংসার। একটি জমি নিয়ে প্রতিবেশী আনোয়ারা বিবির সঙ্গে তার বিবাদ হয়। দুই জনেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী। অভিযোগ আনোয়ারা বিবি তারপরেই দলবল নিয়ে এসে টুম্পা খাতুনের বাড়িঘর ভাঙচুর করে তাদের মারধর করে। এমনকি বাড়ির মধ্যে থাকা গয়না, আসবাবপত্র ,জামাকাপড়, খাদ্যদ্রব্য সব লুটপাট করে নিয়ে চলে যায়।

তিন শিশু সন্তানকে নিয়ে অসহায় ওই মহিলার ঠাঁই হয়েছে এখন গোয়াল ঘরে।কখনও বা পাটের জমিতে কাটাতে হচ্ছে রাত। এমনকি সর্বস্ব লুট হয়ে যাওয়ায় ঠিক করে খাওয়ার জুটছে না। তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত সহ ওই বুথটি তৃণমূলের দখলেই। কিন্তু স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য পঞ্চায়েত প্রধান কেউ এসে পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ তৃণমূল কর্মী। প্রশ্ন উঠছে তবে কি এই ঘটনায় দলের একাংশের মদত রয়েছে?

যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখা হবে। থানায় আনোয়ারা বিবি সহ ২১ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক বলে জানা গেছে। আক্রান্ত টুম্পা খাতুন এই মুহূর্তে আইন অনুযায়ী ন্যায় বিচার চাইছেন। এদিকে এই বিষয় নিয়ে তৃণমূলকে তীব্র কটাক্ষ করেছে বিজেপি।আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী টুম্পা খাতুন বলেন,” জমি নিয়ে প্রতিবেশী আনোয়ারা বিবির সঙ্গে একটা ঝামেলা ছিল। তার জন্য আমার ঘর বাড়ি ভেঙে সর্বস্ব লুট করে নিয়েছে। আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। তিন সন্তানকে নিয়ে গোয়ালঘরে, বাঁধে পাটের জমিতে রাত কাটছে। আমি তৃণমূল করি।

Advertisement

আমাদের পঞ্চায়েত সদস্য কে জানিয়েছে কিন্তু এখনো আসেন নি। ফোন করলে ধরছেন না। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। আমার সুবিচার চাই।”স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য শাহজাহান আলী বলেন,” দুইজনেই আমার দলের লোক। বাস্তু ভিটে নিয়ে ওদের গন্ডগোল ছিল। তিন বা চার দিন আগে কেউ বা কারা বাড়ি ভাঙচুর করেছে। এখনো সেই জায়গায় যাওয়া হয়নি।

যাব এবং অবশ্যই পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।”হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মানিক দাস বলেন,” সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারলাম। ওই অঞ্চলের নেতৃত্বকে খোঁজ নিতে বলবো। দল যদি কোন ভাবে জড়িত থাকে তাও খোজ নেব। যা ঘটেছে তা যদি সত্যি হয় উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”বিজেপির জেলা সম্পাদক কিষান কেডিয়া কটাক্ষের সুরে বলেন,”তৃণমূল নিজেদের মধ্যেই মারামারি করছে।যে মহিলাটির বাড়ি ভেঙেছে সে এখন গোয়াল ঘরে আশ্রয় নিয়েছে।

মানুষ এখন বুঝুক মানুষ কাদের ভোট দিয়েছে।সমস্ত দলটাই দুর্নীতি, সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত।”আক্রান্ত মহিলার স্বামী বাড়িতে থাকেন না।ফলে এই মুহূর্তে যথেষ্ট অসহায়তার মধ্যে তাদের দিন কাটছে।তাও দলীয় নেতৃত্ব এখনো কেন পাশে দাঁড়ায় নি তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।শেষ পর্যন্ত দুই তৃণমূল কর্মীর বিবাদে দল কি অবস্থান নেয় তাই দেখার বিষয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here