পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ।

0
172

কুমার মাধব ::২৪ঘন্টা লাইভ ::২৯ই জুন ::মালদা :: পঞ্চায়েত সদস্যা ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল দেওর এবং সুপারভাইজারের।অভিযোগ জানিয়েছিল।তবে অভিযোগের দুই দিনের মধ্যেই বাকি গ্রামবাসীরা পাল্টা অভিযোগ জানাল। সঙ্গে মেম্বারকে বদনাম করার জন্য বিক্ষোভ দেখালো। পরিকল্পনা করে ফাঁসানো হয়েছে গ্রামের মেম্বারকে, এই দাবিতে ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা।

ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকা জুড়ে। বিক্ষোভরত গ্রামবাসীদের অভিযোগ গ্রামের কিছু দুষ্কৃতী গ্রামের মেম্বারের আত্মীয়ের সঙ্গে ভুয়ো টাকা লেনদেনের ভিডিও সামনে এনে গ্রামের মেম্বারকে কাটমানি ইস্যুতে বদনাম করতে চাইছে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে।

তাই গ্রামের বাসিন্দারা এই বিষয়টি জানতে পেরে মিলিত ভাবে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক অফিসে বিক্ষোভ দেখায়। তাদের বক্তব্য ছিল গ্রামে কিছু ব্যক্তি যারা এর আগে বিভিন্ন অপরাধে অভিযুক্ত তারাই গ্রামের শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে এই গভীর ষড়যন্ত্র করেছে ।গ্রামের মেম্বার বা তার স্বামী কোনো ভাবেই কোনো দুর্নীতি তে যুক্ত নয়। সমস্ত ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু।

Advertisement

প্রসঙ্গত গত দুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সেখানে দেখা যায় কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডিপুরা-গাররা গ্রামের মেম্বার রুমা সাহার দেওর এবং ওই পঞ্চায়েতের সুপারভাইজার কে এক জনের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। তারপরই ওই ভিডিও কে সামনে রেখে গ্রামের রাকিব হোসেন দিলশাদ রাজা নামক ব্যক্তিরা দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘর পাওয়ার জন্য কাটমানি হিসাবে মেম্বারের কাছে টাকা পৌঁছে না দিলে ঘর পাওয়া যাবে না। এই টাকাটা তারা কাটমানি হিসাবে মেম্বারের দেওর কে দিয়েছিল সুপারভাইজারের উপস্থিতিতে।

এ নিয়ে তারাও মেম্বার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধেও বিডিওর কাছে অভিযোগ জানায়। কিন্তু দুদিন গড়াতে না গড়াতেই গোটা গ্রামবাসী এই ঘটনাকে সংশ্লিষ্ট মেম্বারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দাবি করে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ দেখান। এবং বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন রাকিব হোসেন ও দিলশাদ খানের আগেও বহুবার গ্রামে অশান্তি পাকাবার চেষ্টা করেছে। তারা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কোন বেনেফিশিয়ারি নন, গ্রামবাসীদের দাবি এরা গ্রামের মেম্বারের কাছে অনৈতিকভাবে টাকা দাবি করে আসছিল। সেটা মেম্বার দিতে অস্বীকার করায় তাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। এই ভিডিও ভুয়ো।

এদিকে বিক্ষোভকারী আফতাব হুসেন বলেন,” ওই গ্রামের অভিযোগকারী রাকিব আলী, দিলশাদ খান এরা দুষ্কৃতী। ইচ্ছে করে আমাদের সদস্যা কে বদনাম করার চেষ্টা করছে। আমরা এর বিচার চাই।”বিলানি দাস বলেন,”ওই তিনজন আমাদের মেম্বারের উপর ইচ্ছাকৃত বদনাম লাগিয়েছে।আমরা এর বিচার চায় তাই বিডিওর কাছে এসেছি।”

এদিকে ভিডিওতে যাকে টাকা নিতে দেখা যাচ্ছিল সেই পঞ্চায়েত মেম্বার রুমা সাহা দেওর রতন সাহা জানিয়েছেন আমি আলাদা থাকি। আমার ব্যক্তিগত ব্যবসা রয়েছে। যে ব্যাক্তিরা টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছে আমার বিরুদ্ধে তাদের কাছ থেকে আমার দোকানের জিনিসপত্র বাবদ বেশ কিছু টাকা বাকি পড়েছিল। বারবার তাগাদা করা সত্ত্বেও দেয়নি। অনেকবার গন্ডগোল হয়েছে। সম্প্রতি ওরা আমার পাওনা টাকা মেটাতে এসে লুকিয়ে ভিডিও করে সেটাই ভাইরাল করেছে।

Advertisement

এবং সোশ্যাল মিডিয়ার রটিয়ে দেওয়া হয়েছে আমি না কি আমার বৌদি হয়ে আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে কাটমানি নিচ্ছি। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল এবং ভিত্তিহীন। আমরা এ ব্যাপারে বিডিও সাহেব কে জানিয়েছি। এবং লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।পঞ্চায়েত সদস্যা রুমা সাহা বলেন,” যারা অভিযোগ করেছিল তাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। বিরোধীরা ষড়যন্ত্র করে আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোটালো। আমার স্বামী ব্যবসা করে। ভুয়ো ভিডিও ছড়ানো হল। আশা করি প্রশাসন এর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।”

কুশিদা তৃণমূল পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি নুর আজম বলেন,”যে ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল‌ তা মিথ্যা। এটি ব্যবসার টাকা সংক্রান্ত লেনদেনের একটি ভিডিও।উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আমরা সমস্ত ব্যাপারটি দেখেছি।”এদিকে ভিডিও নিয়ে অভিযোগকারীদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে রকিব আলি,ও দিলশাদ খান জানান ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল আমরা নিজেদের মধ্যে সব মিটমাট করে নিয়েছি। এ নিয়ে পার্টি অফিসে আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

Advertisement 8240054075

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নং ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন,” সেদিন ওই সদস্যা এবং তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিল কিছু লোক। আজ গ্রামবাসীরা পাল্টা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। আমরা খতিয়ে দেখছি।”সরকারি প্রকল্প নিয়ে টাকা নেওয়া অপরাধমূলক কাজ। কিন্তু কেউ যদি ষড়যন্ত্র করে কোন জন-প্রতিনিধির ছবি খারাপ করার চেষ্টা করে তা আরো খারাপ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here