পূর্ব মেদিনীপুরের যাত্রা পাড়া নন্দকুমারে আবার সুদিন ফেরার সংকেত ।

0
292

সৌভিক কর :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ৮ই,অক্টবর :: নন্দকুমার :: গ্রাম বাংলার এক লুপ্তপ্রায় প্রাচীন সংস্কৃতি হল যাত্রাশিল্প। । গ্রামেগঞ্জে হাজারো খুঁজে বেড়ালে হয়তো হাতেগোনা কয়েকটি মাত্র যাত্রার দলের দেখা মিলবে। কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার আজও যাত্রাপাড়া হিসেবেই পরিচিত। আর সেই যাত্রা দীর্ঘ কয়েক মাসের লকডাউনে একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। অন্যান্য বছর দুর্গাপুজোর কয়েক মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যেত বুকিং পর্ব। তবে চলতি বছরে সেভাবে বুকিং না হওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ করতে শুরু করেছিল শিল্পীদের। আর এর মাঝে দুর্গাপুজো নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সংকেত পাওয়ার পর ইতিমধ্যে যাত্রা বুকিং শুরু হতে সুদিন ফিরছে নন্দকুমারের যাত্রাপাড়ায়।

চন্ডীমঙ্গল থেকে মনসামঙ্গল, সামাজিক কাহিনী থেকে পৌরাণিক কাহিনী। একসময় গ্রামেগঞ্জে এই যাত্রার মাধ্যমে ফুটে উঠতো দর্শকদের সামনে। কিন্তু সেই যাত্রা আজ গ্রামবাংলা থেকে ক্রমশ হারিয়ে যেতে থাকলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দকুমার আজও সেই যাত্রাপালা হিসেবে পরিচিত। ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কের নন্দকুমার হাইরোডের কাছে সারে সারে রয়েছে ৩০- ৪০ টি যাত্রা বুকিং সেন্টার।

যাদের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে কয়েক হাজার যাত্রাদলের। কোন উৎসব অনুষ্ঠান হলেই নন্দকুমারের এই যাত্রা পাড়ায় যাত্রা বুকিংয়ের ভিড় জমতো। শুরু হয়ে যেত দরকষাকষি। আর সেইসব চেনা ছন্দ কোথাও যেন উধাও হয়ে গিয়েছিল দীর্ঘ কয়েক মাসের লকডাউনে। অন্যান্য বছর রথযাত্রার দিন থেকে শুরু হতো নতুন দল। যা বুকিংয়ের পর দুর্গাপুজোর সময় মঞ্চে মঞ্চে হত যাত্রাপালা। কিন্তু চলতি বছরে দুর্গাপুজো নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকায় বুকিং একেবারে নেই বললেই চলে।

হঠাৎ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজো নিয়ে সবুজ সংকেতের দিয়েছেন। সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে এবং সরকারের সমস্ত নির্দেশিকা মেনে পুজো করা যাবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর থেকেই ক্রমশ বুকিং বাড়ছে যাত্রাপাড়া নন্দকুমারে। এক- একটি যাত্রাদল গড়তে লক্ষ টাকার সমান খরচ পড়ে। কিন্তু যাত্রা বুকিং না হলে সে যে একদম মাঠে মারা যাবে। ফলে বর্তমানে বুকিং শুরু হওয়াতে হাসি ফুটছে যাত্রাপাড়ায়।

তাম্রলিপ্ত যাত্রা কল্যাণ সমিতির সম্পাদক শেখ জাহাঙ্গীর বলেন, “আমাদের এই যাত্রা শিল্পের সঙ্গে কয়েক হাজার মানুষের  রুজিরুটি জড়িয়ে রয়েছে। লকডাউনে যাত্রাপালা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসার চালাতে সমস্যায় পড়ছিলেন সকলে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকে যেভাবে বুকিং শুরু হয়েছে তাতে আমরা খুশি।

মুখ‍্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।”চন্ডীপুরের এক পুজো উদ‍্যোক্তা শেখ জুলফিকার আলি বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। তিনি সবুজ সংকেত দেওয়ার পরই আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি। তাই আজ যাত্রা বুকিং করতে এলাম। আমার পুজোর অন‍্যতম অঙ্গ হল এই যাত্রাপালা।” সবমিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষনাতে খুশির হাওয়া নন্দকুমারের যাত্রাপাড়ায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তারা সকলে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here