বেলিয়াতোড়ের রায় পরিবারের প্রথা মেনেই দুর্গা দেবীর মুখমন্ডলের পূজা হয় এখানে !

0
175

নরেশ ভকত :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ২৭শে অক্টবর :: বাঁকুড়াঃ:: প্রচলিত দেবী দুর্গার মূত্তির আদল থেকে ভিন্ন “বেলিয়াতোড়ের রায় পরিবারের দুর্গা প্রতিমা । দেবীর মুখমন্ডলের পূজা হয় এখানে , স্থানীয় ভাবে দুর্গা মন্দিরের নাম “বড়মেলা”। চার পাঁচ’শ বছর আগের মল্লরাজ অধীনস্থ বিষ্ণুপুরে। মোঘল সেনাপতি মানসিংহ প্রবল যুদ্ধ করে পরাক্রমশালী রাজা প্রতাপাদিত্য রায়কে পরাস্ত করে যশোর জয় করেন। প্রতাপাদিত্য রায়ের শক্তির উৎস ছিলেন যশোরেশ্বরী। প্রতাপাদিত্য রায়ের কনিষ্ঠ পুত্র রাজীবলোচন অতি সন্তর্পনে বুকে করে যশোর থেকে নিয়ে আসেন মুর্শিদাবাদে।রাজপুরুষোচিত চেহারা দেখে ও তার বাগ্মিতায় মুগ্ধ হয়ে মুর্শিদাবাদের রাজা তাঁকে উচ্চপদে নিয়োগ করেন।

কিন্তু কিছুদিন পর রাজীবলোচন মায়ের পূজার ত্রুটি হতে পারে ভেবে সঙ্গী সাথীদের নিয়ে তৎকালীন হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপদ স্থান শ্রীক্ষেত্র বর্তমানে পুরী ধামের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথের মাঝে পড়ে বিষ্ণুপুর। কাছাকাছি একটি চটিতে আশ্রয় নেন। ছদ্মবেশে থাকায় মল্লরাজ বীর হাম্বিরের লোকজন খবর পেয়ে তাঁকে নিয়ে আসে রাজ দরবারে।

মল্লরাজ ও তার গুনে মুগ্ধ হয়ে বিষ্ণুপুরের দেওয়ান পদের জন্য মনোনীত করেন। কিন্তু মায়ের সেবাপূজার ঠিক মত ব‍্যবস্থা ঠিকমতো করতে পারবেন এই অঙ্গিকার পাওয়ায়, পুত্র রাজ‍্যধরকে আদেশ দেন “দেওয়ান” পদ গ্ৰহনের জন্য। রাজ‍্যধর দেওয়ান পদের যোগ দেওয়ার পর ৺দেবীর মন্দির তৈরী হয় ।

তখন থেকেই দেবী পূজিত হচ্ছেন “দেবী দশভূজা” রূপে বিষ্ণুপুরের গোপালগঞ্জে। কথিত আছে রাজীবলোচনকে ঐ মূর্তি গোপনে দান করেন এক দক্ষিণী ব্রাহ্মন। বেলিয়াতোড়ের রায় পরিবার বিষ্ণুপুরের রাজ পরিবারের দেওয়ান রাজ‍্যধরের উত্তর সুরি হওয়ার সুবাদে দেবী যশোরেশ্বরীর অনুকরণে তৈরি৺মা দশভূজার পূজা হয় বিষ্ণুপুরে আর মায়ের মুখমন্ডলের পূজা করা হয় বেলিয়াতোড়ে। পূজোর ষষ্ঠীর দিন বাহক মারফৎ পূজা পাঠিয়ে দেয়া হয়, বিষ্ণুপুরে,

রায় পরিবার পূজো করেন বেলিয়া তোড়ে।৺দেবী দশভূজাকে স্মরণ করে শুধুমাত্র মুখাবয়বের পূজা করা হয়। বিষ্ণুপুরের দশভূজা হলেন বৈদিক যুগের অসুর নাশিনী চামুণ্ডা রুপীনি মা দুর্গা। অসুর সংহারে দেবতারা রণক্ষেত্রে যে রূপে দেবীকে সজ্জিত করেছিলেন সেই রূপেই পূজিত হন।বেলেতোড়ের রায় পরিবার আজও পূজা অর্চনার মাধ্যমে সপরিবারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন পূজার দিন গুলোতে। দেবীর আশীর্বাদ লাভ করে বিশ্ববিখ্যাত হয়েছেন শিল্পী যামিনী রায়। যিনি বিশ্বের দরবারে বেলেতোড়ের রায় পরিবারের নাম উজ্জ্বল করেছেন। রায় পরিবারের অপর কৃতি বিদ্বজ্জন হলেন-শ্রীকৃষ্ণ কীর্ত্তন রচয়িতা ও ব‍্যাখ‍্যাতা বিদ্বদ্বল্লভ বসন্ত রঞ্জন রায়ক

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here