মালদায় আবাস যোজনায় কাটমানির অভিযোগ – হরিশ্চন্দ্রপুরের বিডিওর পুলিশে অভিযোগ

0
222

কুমার মাধব :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ১৭ই,সেপ্টেম্বর :: মালদা :: আবাস যোজনার ঘর পাইয়ে দিতে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী ৩০ হাজার টাকা নিয়েছেন বলে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের এক উপভোক্তা। একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর করার কথা বলে ওই গরিব উপভোক্তার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নিয়েছেন এক সাংবাদিক বলে অভিযোগ। হরিশ্চন্দ্রপুরেরই স্বঘোষিত ওই ফেসবুক সাংবাদিকের নাম হাবিবুর রহমান। কিন্তু ওই সাংবাদিক টাকা নিয়েও উল্টে অভিযুক্তের পক্ষ নেন বলে অভিযোগ। সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে আসা দাপুটে ওই তৃণমূল নেতা অলোক পোদ্দার অভিযোগ করায় উপভোক্তার স্বামী হাসিমুদ্দিনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও করেন বলে প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।

সম্প্রতি এই ঘটনাটি কুশিদায় ঘটলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় আমাদের প্রতিনিধির বিরুদ্ধেই পাল্টা টাকা চাওয়ার অভিযোগ তোলা, মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর গল্পটা বেশ পুরনো। যেমন হরিশ্চন্দ্রপুরে ভেজাল হলুদের কারবার তুলে ধরার কথাই ধরা যাক। হরিশ্চন্দ্রপুরের কয়েকটি এলাকায় বছরের পর বছর ধরে ভেজাল হলুদের রমরমা কারবার চলছে বলে বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন।

প্রায় সমস্ত সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছিল। এক মিল মালিক স্বীকারও করেছিলেন যে, আমরা আগে ভেজাল হলুদ তৈরি করতাম। এখন করি না। অন্য কেউ করতে পারে। আমাদের প্রতিনিধিও বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। তারপর প্রশাসন ঘটনার তদন্তে নামে। দুর্নীতিদমন শাখাও অভিযান চালায়। ওই সময় ভেজাল হলুদের কারবারিদের পাশে দাঁড়ান ওই ফেসবুক সাংবাদিক।

ফেসবুকে যেভাবে টিভি চ্যানেলের নাম দিয়ে প্রচার চালানো হয়, তাতে সাধারণ মানুষের পক্ষে তা একটি টিভি চ্যানেল বলে মনে করা স্বাভাবিক। সেই ফেসবুক চ্যানেলটি ওই সাংবাদিকের নিজেরই। ভেজাল হলুদ কারবারিদের হয়ে তিনি কেন প্রচার করছিলেন সেটা আমরা জানি না। কিন্তু ওই সময়ও আমাদের প্রতিনিধির বিরুদ্ধে উল্টে ভেজাল হলুদের কারবারিদের কাছে থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ তোলা হয়।

একইভাবে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের একাধিক আইসিডিএস কেন্দ্রে ঠিকমতো খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলে প্রশাসনের কাছে বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তার খবরও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি আমাদের প্রতিনিধিও তুলে ধরেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে খোদ মহকুমাশাসক এলাকায় গিয়ে তদন্ত করেন। তারপরেই ছবিটা পাল্টে যায়। নিয়ম মেনে খাবার দেওয়া শুরু হয়। বদলি হতে হয় ওই সুপারভাইজারকে। এক্ষেত্রেও ওই ফেসবুক সাংবাদিক সক্রিয় হয়ে দফতরের এক সুপারভাইজারের পাশে দাঁড়ান। তিনিও আমাদের প্রতিনিধির বিরুদ্ধে টাকা চাওয়ার অভিযোগ তোলেন।

কি বলছেন হোসেনপুরের উপভোক্তা সেহেনা বিবির স্বামী হাসিমুদ্দিন। তিনি বলেন, আমিও তৃণমল করি। খবর হলে আমি আমার কাটমানির টাকা ফেরত পাব বলে নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে হাবিবুর রহমান আমার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নেয়। কিন্তু আমার সমস্যা তো মিটলই না। উল্টে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হল। যে সাংবাদিক আমাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছিলেন, শুনেছি তার বিরুদ্ধেও মিথ্যে মামলা করা হয়, মিথ্যে টাকা চাওয়ার অভিযোগও তোলা হয়।

আরেক উপভোক্তা রফিকুল বলেন, কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ জানানোয় আমাকেও অলোক পোদ্দারের অনুগামীরা হুমকি দিয়ে চলেছে। মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছে। এক উপভোক্তা তো অভিযোগ করে ভয়ে ১৩ দিন বাদে অভিযোগ তুলে নিয়েছে।

একের পর এক এমনই ঘটনায় স্পষ্ট, আমাদের প্রতিনিধি যখনই গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, দুর্নীতির খবর করেছেন, তখনই অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়িয়ে, তার হয়ে ফেসবুকে প্রচার চালিয়েছেন ওই সাংবাদিক হাবিবুর রহমান। কিন্তু আমাদের খবরের জেরে ভেজাল হলুদের মিলগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। ফের দুর্নীতি হলে মানুষের স্বার্থে আমরা তুলে ধরব। আইসিডিএস কেন্দ্রগুলিও ভালো চলছে। দুর্নীতি হলে ফের আমরা মানুষের স্বার্থে তা তুলে ধরতে বদ্ধ পরিকর।হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু জানান আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি, পাশাপাশি পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে জানান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here