মালদায় ওজনে কম নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগে আইসিডিএস কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জোড়ালো গ্রামবাসী।

0
319

https://youtu.be/6wQ48vYJq1sকুমার মাধব :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ১৯শে আগস্ট :: মালদা :: ওজনে কম নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগে আইসিডিএস কর্মীর সঙ্গে হাতাহাতিতে জোড়ালো গ্রামবাসী। মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার পিপলা গ্রামের একটি আইসিডিএস সেন্টারের আজ এলাকার অভিভাবকদের সরকার নির্দেশিত চাল,মসুর ডাল ও ছোলা দেওয়া হচ্ছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ এই আইসিডিএস সেন্টারের কর্মী অঞ্জলি দাস প্রত্যেকটি সামগ্রী তে ওজনে কম দিচ্ছিলেন। তার সঙ্গে সঙ্গে ছোলা ওজনে কম ও নিম্নমানের দেওয়া হচ্ছিল। এই অভিযোগ তুলে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর সামনে গ্রামবাসীরা প্রতিবাদ করলে স্থানীয় এক অভিভাবক কে থাপ্পড় মারেন আইসিডিএস কর্মী অঞ্জলি দাস।

এরপরই গ্রামবাসী ওই কর্মীর উপর চড়াও হয়। ওই আইসিডিএস কর্মীকে গ্রামবাসীরা মারধর করে এমনকি ভেতরের খাদ্য সামগ্রী ফেলে দেয়। দীর্ঘক্ষণ ওই সেন্টারে আটক করে রাখে ওই কর্মীকে। ঘটনার খবর পেয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং অঞ্জলি দাসকে উদ্ধার করে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ প্রশাসন সূত্রে খবর দুই পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। এই ঘটনার জেরে হরিশ্চন্দ্রপুর পিপলা এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

ওই সেন্টারে স্থানীয় এক অভিভাবক শকুন্তলা দাস জানিয়েছেন দীর্ঘদিন থেকেই এই সেন্টারে নিম্নমানের সামগ্রী দেওয়া হয় তার সঙ্গে সঙ্গে ওজনে কম দেওয়া হয়। এর আগে যখন আলু দেওয়া হয়েছিল সে আলু বেশির ভাগই পচা ছিল। আমরা এর আগেও প্রতিবাদ করেছি কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আজও যথারীতি 1 কেজি ছোলার পরিবর্তে ছয় থেকে সাতশো গ্রাম ছোলা দেওয়া হচ্ছিল। চাল প্রতি কেজিতে দুইশো থেকে আড়াইশো গ্রাম কম ছিল। ডাল তিনশো গ্রাম এর জায়গায় কোথাও দুইশো গ্রাম কোথাও আড়াইশো গ্রাম দাওয়া হয়েছে। এই নিয়ে আজ আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি।

অভিভাবক মামনি দাস জানান এই সেন্টারে অঞ্জলি দাস দীর্ঘদিন ধরে ওজনে কম সামগ্রী দিচ্ছিল। আর যে ছোলা এই সেন্টার থেকে দেয়া হচ্ছিল তা পোকা ধরা খাবার অযোগ্য। আমরা এই বিষয়ে সেন্টারের কর্মীকে বলতে গেলে উনি অকথ্য ভাষায় আমাদের দিকে তেড়ে আসেন তখনই আমরা এর প্রতিবাদ করি।

এদিকে পাল্টা অভিযোগ স্থানীয় গ্রামবাসীরা ওই অঞ্জলি দাস নামে কর্মীকে মাটিতে ফেলে মারধর করেছে। এ প্রসঙ্গে অঞ্জলি দাস জানান আমরা ওজন করার মেশিন এ সমস্ত সামগ্রী ওদের সামনে ওজন করে দিচ্ছিলাম। এমনকি ওদের দাবিমতো ডিজিটাল মেশিন সমস্ত সামগ্রী ওজন করে দেয়া হচ্ছিল। সামগ্রী নিম্নমানের এই অভিযোগটি সত্য নয়।

স্থানীয় পঞ্চায়েত মেম্বার দ্রোণাচার্য ব্যানার্জি জানান গ্রামবাসীর কাছ থেকে প্রথমে অভিযোগ পেয়েছিলাম যে এখানে চাল ডাল ছোলা এগুলো কম দেওয়া হচ্ছে। তারপর আমি আসার পর কম্পিউটার ওজন নিয়ে আসা হয়।ওজনের সামগ্রী কম দেওয়ার ব্যাপারটি আইসিডিএস কর্তৃপক্ষ খতিয়ে দেখুন এই ব্যাপারটি আমরাও চাই।এ প্রসঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের বিডিও অনির্বাণ বসু জানিয়েছেন অভিযোগ পেয়েছি। আইসিডিএস এর প্রজেক্ট অফিসার কে এ ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানা আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানান দুই পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেছে আমরা অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখছি।

বিজেপির নেতা রূপেশ আগারওয়াল কটাক্ষ করে বলেন তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যজুড়ে আইসিডিএস সেন্টারের দুর্নীতি চলছে। প্রায় প্রতিটি জায়গায় সামগ্রী কম দেয়া হচ্ছে এবং নিম্ন মানের দেওয়া হচ্ছে। এই নিয়ে প্রতিবাদ করে কোন লাভ নেই। আর কিছুদিন পরেই এই সরকারের পতন ঘটবে। মানুষেই দুর্নীতিবাজ সরকারকে আর রাখবে না।

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা জম্মু রহমান জানান আমরা গ্রামবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ শুনেছি। এলাকায় গিয়ে বিশদে ব্যাপারটি খতিয়ে দেখব। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here