মিথ্যা বলায় ট্রাম্পের ভাষণ সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হলো খোদ হোয়াইট হাউসে থেকে – একেই বলে গণতন্ত্র !

0
465

আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ৬ই,নভেম্বর :: কোলকাতা :: আজ আমি যে প্রসঙ্গের অবতারণা করছি এবং যে খবরটি লিখছি তা দেখে আমাদের গণতন্ত্রের প্রহরী রাজনৈতিক নেতাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত । খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রম্পের হোয়াইট হাউস থেকে সরাসরি সম্প্রচার করছিল একটি মার্কিনি চ্যানেল এমএসএনবিসি। তার সাংবাদিক শেফার্ড স্মিথ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যা বলছেন তা সর্বান্তকরণে অসত্য।’

ভারতের কোনো রাজ্যে বসে এরকম একটা কর্মকান্ডের কথা কি ভাবা যায় । মনে আছে আপনাদের অম্বিকেশ মহাপাত্রের কথা । আপনাদের মনে আছে মুম্বাই এর মিডডে কাগজের মুখ্য সাংবাদিক জি দে’র কথা । মনে আছে গৌরী লংকেশের কথা । মুখ খুলতে এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যেয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিলেন । আর এখন রিপাবলিক টিভির সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামীর কথা । আমরা মুখে যতই বলিনা কেন সংবাদপত্রের গণতন্ত্রে কিন্তু আমেরিকাতে অনেক অনেক বেশি । এই প্রতিবেদনটি পড়লেই বুঝতে পারবেন ।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে অপেক্ষার অবসান হয়নি। উত্তেজনা আর অপেক্ষার প্রহর বাড়ছে। নিজের দাবি নিয়ে নিঃসঙ্গ প্রেসিডেন্টের পাশে তাঁর পরিবার ছাড়া কেউ নেই প্রকাশ্যে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুদিন পর প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এসে বক্তব্য দিয়েছেন। এ সময় নির্বাচনে জয় নিয়ে তাঁর মিথ্যা দাবি এবং তথ্যহীন ভোট জালিয়াতির কথা বলছিলেন। এ সময় আমেরিকার প্রধান কিছু সংবাদমাধ্যম ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এমএসএনবিসি হোয়াইট হাউস থেকে সরাসরি অনুষ্ঠান প্রচার করে। বিখ্যাত সাংবাদিক ব্রায়ান উইলিয়ামস সে সময় অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছিলেন। ট্রাম্প তাঁর ভিত্তিহীন বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করলে এমএসএনবিসি সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। ব্রায়ান উইলিয়ামস বলেন, ‘আবারও আমরা একটি ব্যতিক্রমী অবস্থান নিচ্ছি। আমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তৃতা সম্প্রচারই শুধু বন্ধ করছি না, আমরা তাঁকে সংশোধন করেও দিচ্ছি।’

প্রেসিডেন্টের বক্তব্য বাস্তবতার সঙ্গে সম্পর্কহীন উল্লেখ করে উইলিয়ামস বলেন, ‘আমাদের দেশ যে জায়গায় অবস্থানা করছে, সেখানে এ বক্তব্য বিপজ্জনক।’ সিএনবিসির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়ার সময় সাংবাদিক শেফার্ড স্মিথ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট যা বলছেন তা সর্বান্তকরণে অসত্য।’

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের লাইভ বক্তৃতা সম্প্রচারের সময় নিজেদের ব্যাখ্যা তুলে ধরে বলেছে, ভোটের গণনা এখনো শেষ হয়নি। সিএনএনএনের সাংবাদিক এন্ডারসন কুপার বলেছেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তিকে আমরা দেখছি, যেন রোদে পোড়া স্থূল কচ্ছপের মতো। ভাসতে ভাসতে যে মনে করছে তাঁর সময় শেষ হয়ে আসছে।’

দুদিন পর জনসমক্ষে ১৬ মিনিটের বক্তৃতা দেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বিমর্ষ দেখা গেছে। তাঁর পক্ষে রিপাবলিকান পার্টির লোকজনকেও প্রকাশ্যে কোনো অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই ভোট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগাম অভিযোগ করায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনাও করছেন।

সবার চোখ এখনো পাঁচ অঙ্গরাজ্যের দিকে। এসব রাজ্যে দুই প্রার্থীর মধ্যে ব্যবধান এতটাই কম যে যেকেউ জয়ী হতে পারেন। অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নেভাদা, পেনসিলভানিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনা রাজ্যের গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেই কিছু বলতে পারছে না। ভোটের সংখ্যা ওঠা নামা করছে। কোথাও কোথাও ভোটের ব্যবধান কয়েক হাজারের মধ্যে।

তৃতীয় দিনের মতো যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ২০টি নগরীতে হাজার হাজার মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব শান্তিপূর্ণ   গন – শোভাযাত্রা । কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে। অ্যারিজোনা ও মিশিগানে ট্রাম্প–সমর্থকদের অস্ত্রসহ বিক্ষোভ–সমাবেশ করতে দেখা গেছে। কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটলেও তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলেও সংখ্যা নিশ্চিত করা যায়নি।

শুধু সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান রিপাবলিকান লিডসে গ্রাহাম বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও নাভাদার ভোট গণনায় অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ব্যয় সামাল দেওয়ার জন্য পাঁচ লাখ ডলার দেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here