BREAKING NEWS : জিতলে মুখ্যমন্ত্রীর একটি দপ্তর হবে নন্দীগ্রামে – মমতা

0
303

আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ২৯শে,মার্চ :: নন্দীগ্রাম :: নির্বাচনে জিতলে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর একটি দপ্তর বানানোর কথা বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়া বাজারে আয়োজিত এক জনসভায় যোগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা এ কথা বলেন ।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার দ্বিতীয় দফার নির্বাচন আগামী ১ এপ্রিল। এই দফায় রাজ্যের ৪ জেলার ৩০ আসনে নির্বাচন। দ্বিতীয় দফায় যেসব আসনে নির্বাচন হবে, তার মধ্যে রয়েছে নন্দীগ্রাম। এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন মমতা। তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। তিনি একসময় মমতার ডান হাত ছিলেন। শুভেন্দু তৃণমূলের মন্ত্রী ছিলেন। গত ডিসেম্বর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে আকর্ষণের কেন্দ্রে রয়েছেন মমতা ও শুভেন্দুর লড়াই ।

নন্দীগ্রামে তৃণমূল ও বিজেপির নির্বাচনী প্রচার এখন তুঙ্গে। এই প্রচারকে বেগবান করতে মমতা গতকাল বিকেলে ছুটে যান নন্দীগ্রামে। তিনি নন্দীগ্রামের রেয়াপাড়ায় যান। সন্ধ্যায় যোগ দেন দোল উৎসবে। রেয়াপাড়া বাজারে আয়োজিত জনসভায় মমতা বলেন, তিনি যদি নন্দীগ্রাম আসনে জিততে পারেন, তবে সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর একটি দপ্তর বানাবেন। এই অঞ্চলের মানুষের আর কষ্ট করে কলকাতায় যেতে হবে না। সব কাজ এই দপ্তর থেকেই সম্পন্ন হবে।

মমতা আরও বলেছেন , তিনি সেখানে ছোট্ট একটা বাড়িও বানাবেন। সেই বাড়ি হবে তাঁর কলকাতার কালীঘাটের বর্তমান টালির ঘরের রেপ্লিকা। এটি হবে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের ভূমিকন্যার বাসভবন। বাড়িটি সম্পর্কে মমতা বলেন, এটি হবে এক ঐতিহ্যবাহী কুঁড়েঘর। দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা এসে বাড়িটি দেখতে পারবেন।

নন্দীগ্রাম আসনে ১০ মার্চ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে সেখানে একটি বাড়ি এক বছরের জন্য ভাড়া নেন মমতা। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে নন্দীগ্রামের বিভিন্ন মন্দির দর্শনের পর রেয়াপাড়া বাজারে এক দুর্ঘটনায় পড়ে পায়ে প্রচণ্ড চোট পান তিনি। কলকাতায় দুই দিন চিকিৎসা শেষে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। তারপর পায়ে প্লাস্টার নিয়ে হুইলচেয়ারে বসে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। আহত হওয়ার ১৮ দিন পর গতকাল তিনি হুইলচেয়ারে বসে রেয়াপাড়ায় যান।

মমতা আগেই বলে দিয়েছিলেন, ২৭ মার্চ প্রথম দফার নির্বাচন শেষে তিনি নন্দীগ্রামে যাবেন। তারপর নির্বাচনের আগপর্যন্ত প্রচার চালাবেন। সেই অনুযায়ী গতকাল তিনি নন্দীগ্রামে আসেন । তবে তিনি যে বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন, সেখানে উঠতে পারেননি। কারণ, বাড়িটি দোতলা। পায়ে আঘাত নিয়ে তিনি সেখানে উঠতে পারেননি। তাই আপাতত ঠাঁই নিয়েছেন পাশের এক দিদিমণির বাড়িতে। সেই বাড়ির নিচতলায় রয়েছে দুটি কক্ষ। সেখানে থেকেই তিনি নির্বাচনী প্রচার চালাবেন।

নন্দীগ্রাম ছিল মমতার ক্ষমতায় যাওয়ার এক সিঁড়ি। জমি অধিগ্রহণ বিরোধী আন্দোলনের জেরে ২০০৭ সালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নন্দীগ্রাম। একই সঙ্গে হুগলির সিঙ্গুরে টাটার ন্যানো গাড়ির কারখানার জন্য বামফ্রন্ট সরকারের জমির দেওয়া বিরুদ্ধেও আন্দোলন তীব্র হয়। এই দুই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ২০১১ সালের রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে মমতা ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসেন। সেই নন্দীগ্রাম আসনেই এবার প্রার্থী হয়েছেন মমতা।

এখন মমতা নির্বাচনে সুফল পাওয়ার জন্য নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর একটি দপ্তর গড়ার কথা বলছেন। অন্যদিকে, বিজেপির নেতা শমীক ভট্টাচার্য আগে বলেছিলেন, নির্বাচনে তাঁরা জিতলে রাজ্য সচিবালয় নবান্ন হাওড়া থেকে সরিয়ে ফের সাবেক কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিং বা মহাকরণে স্থানান্তরিত করা হবে। আবার বিজেপির সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় আরেক ঘোষণায় বলেছিলেন, দল জিতলে বর্তমান সচিবালয় নবান্নকে হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম বা ছাত্রাবাস করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here