24 ঘন্টা লাইভ সংবাদাতা / বিজপূর / 14 এপ্রিল: বাংলা বিধানসভা নির্বাচন কে পাখির চোখ করে ফেলেছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে উচ্চস্তরের নেতৃত্ব পর্যন্ত নেমে পড়েছেন জেলায় জেলায়।
ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র কে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি ও তৃনমূল বলে মনে করা হচ্ছে । আবার এখানেই রয়েছে বিজেপির দুই বলিষ্ট চেহারা।
এক সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় ও রাজ্য সহ-সভাপতি অর্জুন সিং এর ঘাঁটি।
এখানেই কয়েকদিন আগে রোড শো করে গিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, গায়ক ও সংসদ মনোজ তিওয়ারি, সেলিব্রিটি মিঠুন চক্রবর্তী সহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। আবারো উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এর আসার কথা ও আছে।
অন্যদিকে হালিশহরে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি করে গিয়েছেন সভা। দেব থেকে রাজ চক্রবর্তী, শুভশ্রী সহ অন্যান্য চমক থাকছে তৃণমূলের তরফ থেকেও ।
কিন্তু আজ বিজপুর এ বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায় এর সমর্থনে, এক জনসভা হতে চলেছে ভারতীয় জনতা পার্টির।
সেই সভাতে মুখ্য বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি মহিলা মোর্চার অন্যতম লড়াকু নেত্রী স্মৃতি ইরানি।
কিন্তু এই সভায় এক বিশেষ চমক থাকবে বলে আমাদের কাছে খবর।
কারণ আজ বিজপুর এর অন্যতম এক তৃণমূল নেতা যোগদান করতে পারেন BJP তে, এমনই সূত্রের খবর ।
এই মুহূর্তে তার নাম প্রকাশ না করলেও আমরা, তার এই পদক্ষেপ এর কয়েকটি কারণ বলে দিতে পারি :
প্রথম হল :
তিনি সেই নেতা যে তৃণমূলের হয়ে বিরোধীদের সাথে চোখে চোখ মিলিয়ে কথা বলেছিলেন এক সময়। এমনকি 23 এ মে 2019 এর পর যখন অনেকেই বিজেপি তে কিং বা কেউ কেউ নিজের ঘরে ঢুকে গিয়ে ছিলেন। তখন ও হাল ছাড়েননি তিনি।
তারপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি বদলায়, মাঠে নামানো হয় সুবোধ অধিকারী কে । কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় দলের পরিস্থিতি ভালো হলেও উচিত সম্মান পেলেন না এই নেতা ।
দলের পুরোনো ও সক্রিয় নেতৃত্তের পদে থাকলেও তার কোনো রকম মতামত নেওয়া হলো না, তার এমনই অভিযোগ রয়েছে ।
দ্বিতীয় কারণ :
একদিকে যখন প্রশান্ত কিশোর কে নিয়োগ করলে দলের অনেক নেতা রা নিজেকে অসম্মানিত বোধ করে দল ত্যাগী হয়েছেন ।
সুবোধ অধিকারী কে ও দেখা যায়, তিনিও ঠিক সেই কায়দায় নিয়োগ করে ফেলেন একটি টিম কে, যার মধ্যে রয়েছে “ডাক্তার – নার্স ও কম্পাউন্ডার” । অবশ্যই খোলামেলা স্বভাবের সুবোধ ও কমল অধিকারীর নেতৃত্ব মেনে নিয়েছিলেন দলের সমস্ত স্তরের স্থানীয় নেতারা ।
কিন্তু বেশ কিছু দিন ধরে এই অনভিজ্ঞ ডাক্তারের টিম মানে “D Company” কে তাদের ওপর ছড়ি ঘোরানো তে মানসিক ভাবে ব্যথিত অনেকেই ।
তাদের বক্তব্য জে “আমরা কি এতই নগন্য জে এই লোক গুলোর কথা বা নির্দেশ মানতে হবে ?
যারা মুদিখানা চালাতো তারা আজ বিজপুরে দল চালাবে ? আমাদের মতন নেতা কে চালাবে ?”
বিজপুর তৃনমূল কি এত অসুস্থ হয়ে পড়েছে যে ডাক্তার নার্স বা কমপাউনডার দের প্রয়োজন পড়েছে ?
দলের একনিষ্ট নেতা বা কর্মীদের কি সেরম ভরসা করতে পারলেন না সুবোধ বা কমল বাবু ?
কে আমাদের নেতা, সুবোধ বাবু নাকি ডাক্তার বাবু ?
তাছাড়া দেখা যাচ্ছে বিজপুর এলাকায় সমস্ত সংস্থায় বা জায়গায় দলের নেতৃত্বে দের পদ বা সম্মান না পাইয়ে দিয়ে, এই “D Company” দের কে ই সব পদ, সম্মান বা জায়গা করে দিচ্ছেন সুবোধ বাবু। এটাও আঘাত দিয়ে চলেছে অনেকের মনে ।
তাদের প্রশ্ন যে তার মানে কি দলের মধ্যে কোথাও এরকম নেতা কর্মী ছিল না যারা সংস্কৃতিক প্রেমি, যারা দলের হয়ে লড়াই করছেন, মানুষের মধ্যে দলের হয় সাংস্কৃতিক বার্তা পৌঁছে দিয়েচ্ছেন । তাদেরকে দূরে রেখে এই “D Company” কে সামনের সারি তে রাখে কি বার্তা দিতে চাইছেন সুবোধ বাবু ?
আজ শিল্প সংস্কৃতি মঞ্চ গড়ে, সেখানেও সমস্ত পদে আসীন হয়েছেন এই “D Company” । তাদের প্রশ্ন কেন ?
হয়তো আগামী দিন বিজপুর এর সভাপতি কিং বা পৌরপ্রধান পদেও এই “D Company” কে মনোনীত করে দেবেন সুবোধ বাবু, এরম ই আশঙ্কা রয়েছে দলের একাধিক সক্রিয় কর্মী বা নেতাদের।
এসব মানতে পারছেন না অনেকেই, শুধু তারা দল কে ভালো বসেন বলেই এখন চুপ আছেন ।
তৃতীয় কারণ :
বীজপুর থেকে দুজন নেতা কে টিকিট দিল দল। যেখানে দেখা গেল সুবোধ কে মেনে নিলেও অন্য এক প্রার্থী আলো রানী সরকারকে টিকিট দেওয়া ক্ষুব্দ দলের অনেক নেতা কর্মী।
তাদের বক্তব্যঃ যে যারা দল করলেন না, শুধু লবি করে সে টিকিটের হকদার ?
আলো রানী সরকার তো বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছিলেন তাও শুধুমাত্র কারণ মুকুল রায় বিজেপিতে যোগদান করা। তাই তার এই পদক্ষেপ। তাছাড়া বীজপুরে রাজনীতিতে তার কি যোগদান রয়েছে, তা আমাদের জানা নেই । কিন্তু আজকে দল তাকেই প্রাধান্য দিল ?
তাই মনে করা হচ্ছে, এই ধরনের নানান কারণ নিয়ে ভারাক্রান্ত মনে নিজের প্রিয় দলকে ত্যাগ করবেন এই নেতা । কিন্তু তার বক্তব্য জে বিজপুরের মানুষের জন্য অব্যাহত থাকবে তার লড়াই ।
ঠিক এ রকমই কয়েকদিন আগে অসম্মানিত বোধ হয় দল ছেড়েছিলেন হালিশহরের প্রাক্তন সভাপতি ও পৌর প্রধান অংশুমান রায়। কিন্তু পরবর্তীতে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পুনরায় দলের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।
এবার দেখার বিষয় যে সেই নেতা কে বোঝাতে সক্ষম হচ্ছে তৃণমূল নাকি তিনি শেষমেষ যোগদান করে ফেলবেন গেরুয়া শিবিরে ।