এক মহিলাকে করোনার ভ্যাকসিনের একসাথে দুটি ডোজ দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ায়।

0
170

নরেশ ভকত::২৪ঘন্টা লাইভ ::১৭ই জুলাই :: বাঁকুড়া :: অভিযোগ গতকাল বড়জোড়া ব্লকের স্থানীয় পখন্না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনার ভ্যাকসিন নিতে গেলে রাজ মাধবপুর গ্রামের গৃহবধূ মন্দিরা পাল কে দশ মিনিটের ব্যবধানে কোভিশিল্ডের পরপর দুটি ডোজ দিয়ে দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সিং কর্মী। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর সারাদিন সুস্থ থাকলেও রাত্রে হঠাৎই তার শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ে । আজ ভোর ৫ টা নাগাদ বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় এখন রীতিমত শঙ্কিত গোটা পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে বাঁকুড়ার রাজমাধপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক পরিবারের গৃহবধূ মন্দিরা পাল স্থানীয় আশাকর্মীর মাধ্যমে জানতে পারেন ৬ থেকে ১২ বছর শিশুদের মায়েদের টিকা দেওয়া হবে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। খবর পেয়ে গতকাল নিজের ৯ মাসের কোলের দ্বিতীয় সন্তানকে নিয়ে গ্রাম থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে থাকা পখন্না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হাজির হন মন্দিরা পাল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁর আধার কার্ড দেখে আর পাঁচ জন মায়ের মতোই নির্দিষ্ট অ্যাপে তথ্য এন্ট্রি করেন সাস্থ্যকর্মীরা।

এরপর তাঁর বাম হাতে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ দেন এক স্বাস্থ্য কর্মী। এরপর নিয়ম অনুযায়ী মন্দিরা পালকে কিছুক্ষণ বসতে বলেন ওই স্বাস্থ্যকর্মী। অভিযোগ কিছুক্ষণ পরেই দশ মিনিটের ব্যবধানে ফের ওই স্বাস্থ্য কর্মী আবার তাঁর বাম হাতে টিকার দ্বিতীয় ইঞ্জেকশান দেন। টিকার লাইনে দাঁড়িয়ে মন্দিরা দেবী অন্যান্যদের মুখে শুনেছিলেন টিকার দুটি ইঞ্জেকশান নিতে হবে। কিন্তু তা যে নির্দিষ্ট দিন অন্তর দেওয়ার নিয়ম তা জানতেন না তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই তিনি টিকার দ্বিতীয় ইঞ্জেকশান দেওয়ার সময় প্রতিবাদ জানাননি।

Advertisement

পরে অন্যান্যদের একটি ইঞ্জেকশান দেওয়া হয়েছে শুনে তাঁকে কেন দুটি ইঞ্জেকশান দেওয়া হল তা জানতে চান স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে। মন্দিরা পালের দাবি একথা স্বাস্থ্যকর্মীর কাছে জানতে চাওয়ায় তাঁদের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরী হয়। এরপর মন্দিরা দেবীকে প্রায় এক ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বসিয়ে রাখা হয় হাসপাতালে। পরে ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

কোভিশিল্ডের দুটি ডোজ একসাথে দেওয়া হলেও মন্দিরা পালের শরীরে তখনো প্রর্যন্ত তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। গতকাল রাত্রে আচমকাই তার শরীর অসুস্থ হতে থাকে। তারপর আজ ভোর পাঁচটা নাগাদ জ্বর ও মাথা ব্যথা নিয়ে তিনি বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসক এবং তার কথা অনুযায়ী তিনি এখন সুস্থ আছেন।

বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বি এম ও এইচ ডাঃ এস এন প্রসাদ জানান যে- প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়ার পর মন্দিরা পাল ওখানেই বসে থাকেন তাই ওখানের এ এন এম নার্স তাকে আবার টিকার এটটি ডোজ দিয়ে ফেলেন । এই বিষয়টি যখন ঐ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার জানতে পারেন তৎক্ষণাৎ তাকে অবজারভেশন এর জন্য প্রায় দুঘন্টা রেখে দেন এবং তার শারীরিক চিকিৎসা করার পর যখন দেখেন কোন রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়নি তখন তাকে ছেড়ে দেন। কিভাবে এই ভুল হলো তা আমরা তদন্ত করে দেখছি । এই রিপোর্ট আমরা সিএমওএইচ কে জানাচ্ছি তিনিই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

Advertisement

এ বিষয়ে বড়জোড়া বিধানসভার বিধায়ক অলোক মুখার্জী বলেন যে – ভোর চারটার সময় যখন রোগীর পরিবার ফোন করে তার অসুস্থতার কথা আমাকে জানান তৎক্ষণাৎ আমি এম্বুলেন্স পাঠিয়ে রোগীকে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করার ব্যবস্থা করে দিই। উনি এখন সুস্থ আছেন, ভালো আছেন । যারা গাফিলতি করেছে মমতা দিদি সরকার তাদের রেয়াত করবে না। আর এই ধরনের ভুল যাতে না হয় তাই আমরা বিভিন্ন জায়গায় কড়া নির্দেশ পাঠাচ্ছি।ভুয়ো ভ্যাকসিন এর পর এবার 10 মিনিটের ব্যবধানে ডবল ডোজ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন এক মহিলা। সেই মহিলার পাশে দাঁড়ালেন ভারতীয় জনতা পার্টির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি । 24 ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ভ্যাকসিন প্রদানকারী স্বাস্থ্যকর্মী কে হাসপাতালে ডাকা হল না কেন ? কেন রাজ্যে ভুয়ো ভ্যাকসিন এর পর একই ব্যক্তিকে ১০ মিনিটের ব্যবধানে ডবল ভ্যাকসিন দেওয়া হলো এইসব অভিযোগে সামনে রেখে বড়জোড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বি এম ও এইচ অফিসের সামনে বিক্ষোভে সামিল হন তারা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here