মালদা জেলায় দলীয় কার্যালয় গুলিতে পতাকা উত্তোলন করে প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেছে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।

0
306

কুমার মাধব :: ২৪ ঘন্টা লাইভ :: ১লা,জানুয়ারি :: মালদা :: একুশের বিধানসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে। ততই তীব্রতর হচ্ছে রাজনৈতিক হিংসা। বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষের সাথে সাথে এবার প্রকাশ্যে এলো তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। একুশের ভোটের আগে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে জেরবার তৃণমূল সুপ্রিমো। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরমে। শুক্রবার তৃণমূল কংগ্রেসের ২৪তম প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হল। এদিন সকাল থেকে রাজ্যের জেলায় জেলায় দলীয় কার্যালয় গুলিতে পতাকা উত্তোলন করে প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেছে নেতা-কর্মীরা।

গোটা রাজ্যজুড়ে মিটিং মিছিল এবং সভার আয়োজন করেছে নেতা-কর্মীরা। এরই মাঝে প্রকাশ্যে এলো দলের অভ্যন্তরীণ গোষ্ঠীদকোন্দল। এদিন দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হয় মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের একই এলাকায় দুই মঞ্চে। যেখানে নির্বাচনের আগে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার সংগঠন মজবুতের বার্তা দিচ্ছেন সেখানে মালদার চিত্রপট উল্টো কথা বলছে।

১ জানুয়ারি শুক্রবার মালদার হরিশচন্দ্রপুরের ১ নম্বর ব্লক এ কিষান ক্ষেত মজদুর ও জয়-হিন্দ বাহিনী এবং অন্যদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ও ২ ব্লক তৃণমূল-কংগ্রেস কমিটির পক্ষ থেকে আলাদা আলাদা ভাবে পালন করা হল দলের প্রতিষ্ঠা দিবস।

এইদিন মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক-১ অন্তর্গত খোকরা প্রাথমিক বিদ্যালয় ময়দানে কিসান ক্ষেত মজদুর ও জয়-হিন্দ বাহিনীর তরফ থেকে প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠান কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় উপস্থিত ছিলেন, জয়হীন বাহিনীর জেলা সভাপতি কৃষ্ণ দাস, মালদহ জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক মর্জিনা খাতুন ও তোবারক হোসেন চৌধুরী, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি হারাধন চন্দ্র দাস, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সহ-সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন, হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লকের জয় হিন্দ বাহিনীর সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম অন্যান্য ব্লক নেতৃত্ব।

হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি হারাধন চন্দ্র দাস অভিযোগ তুলেছেন, ‘তিনি প্রাক্তন সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও দলীয় অনুষ্ঠানে তিনি কোনো আমন্ত্রণ পাননি। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন নিষ্ঠার সাথে দলের হয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু সভাপতি পরিবর্তন হওয়ার পর স্থানীয় নেতৃত্ব প্রাক্তন বিধায়ক তাজমুল হোসেন তার সাথে কোনো রকম যোগাযোগ রাখেন না, দলীয় কোন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ও জানানো হয় না।

অপরদিকে মালদা তৃণমূল-কংগ্রেস কমিটির তরফ থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক-১ কিরণ বালা বালিকা বিদ্যালয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ এবং ২নম্বর ব্লক নেতৃত্বে এইদিন অনুষ্ঠান কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিলো।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক এবং ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি মানিক দাস ও হজরত আলী, মালদা জেলা কো-অর্ডিনেটর মানব ব্যানার্জি, প্রাক্তন বিধায়ক কোঅর্ডিনেটর তাজমুল হোসেন, জেলা পরিষদ সদস্যা মর্জিনা খাতুন, অন্যানো ব্লক নেতৃত্ব বৃন্দ।

মালদা তৃণমূল-কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তথা কো-অর্ডিনেটর তাজমুল হোসেনকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি জানান যে ১ নম্বর ও ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি সহ সভাপতি প্রত্যেকেই এই সভায় উপস্থিত আছেন। অন্য কোথায় কোন সভা হচ্ছে সেই বিষয়ে তিনি অবগত নন। প্রাক্তন ব্লক সভাপতি বর্তমানে এই বিধানসভার মধ্যে পড়েননা, তিনি এখন চাঁচলের বাসিন্দা তাই ওনাকে আহ্বান জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি।

নির্বাচনের আগে দলের শীর্ষনেতারা যেখানে বারংবার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন সেখানে মালদায় গোষ্ঠীকোন্দল স্পষ্ট।এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি ভারতীয় জনতা পার্টি। বিজেপি নেতা রুপেশ আগরওয়ালের স্পষ্ট কটাক্ষ তৃণমূলকে, “এই দলের মধ্যে যতগুলো কর্মী ততগুলো গোষ্ঠী, দলে কেউ কাউকে নেতা বলে স্বীকৃতি দেয়না। পুরো দল চোর-গুন্ডায় সমৃদ্ধ। কয়লা পাচার, সোনা পাচার দলের রক্তে মিশে আছে।

বিধানসভা নির্বাচনের আর চারমাস বাকি। এই চারমাস পর দলের কোনো দিবস পালনের জন্য কেউ থাকবেনা। তৃণমূল-কংগ্রেসের অস্তিত্ব মুছে এবার বাংলায় পদ্ম ফুটবে।” কার্যত আর চার মাস পর বিধানসভা নির্বাচন। বিজেপি-তৃণমূল দুই দলের ভাগ্য নির্ধারণ করবে এই নির্বাচন। জনতা কাকে বেছে নেবে তাদের পরবর্তী শাসক রূপে? মানুষের চোখ এখন সেখানেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here