BREAKING NEWS :: কৃষি বিলের বিরোধিতায় অনমনীয় প্রকাশ সিংহ বাদল ফিরিয়ে দিলেন পদ্মবিভূষণ – বললেন হৃদয়হীন, অকৃতজ্ঞ সরকার

0
264

আনন্দ মুখোপাধ্যায় :: ২৪ ঘন্টা লাইভ  :: ৪ঠা ডিসেম্বর :: নয়াদিল্লি : কৃষকদের দিল্লি অবরোধের অষ্টম দিনে টানা সাত ঘণ্টা বৈঠকের পরও যুযুধান দুই পক্ষ কোনো বোঝাপড়ায় পৌঁছাতে পারল না। সরকার কিছুটা নমনীয় হলেও তিন আইন বাতিলের দাবিতে কৃষক সংগঠনের নেতারা অনড়। আইন বাতিলে তাঁরা অবিলম্বে সংসদের জরুরি অধিবেশন ডাকার দাবি জানিয়েছেন। শনিবার আবার বৈঠক। এরই মধ্যে পঞ্জাবের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অকালি দলের সুপ্রিমো ৯২ বছর বয়সী প্রকাশ সিংহ বাদল ফিরিয়ে দিলেন সর্বোচ্চ নাগরিক সন্মান ” পদ্ম বিভূষণ ” ।

কৃষি আইন নিয়ে ‘চাষিদের সঙ্গে মোদী সরকারের বিশ্বাসঘাতকতা’-র প্রতিবাদে আজ পদ্মবিভূষণ সম্মান ফিরিয়ে দিলেন । এনডিএ-র সবথেকে পুরনো শরিক, শিরোমণি অকালি দলের নেতা জানিয়েছেন, আন্দোলনকারী কৃষকদের যে ভাবে সাম্প্রদায়িক কটাক্ষ করা হচ্ছে, তাতে তিনি গভীর ভাবে আহত। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে চিঠি দিয়ে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়ে পঞ্জাবের পাঁচ বারের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘আমি সত্যিই আশ্চর্য হচ্ছি, সরকার কেন এত হৃদয়হীন, অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ল।’’

পঞ্জাবের শিরোমণি অকালি দলের বিক্ষুব্ধ নেতা সুখদেব সিংহ ধিঁড়সাও পদ্মভূষণ ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। তাঁকে গত বছরই মোদী সরকার পদ্মভূষণ দিয়েছিল। জাতীয় হকি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক পরগত সিংহ-সহ পঞ্জাবের অন্তত ৩০ জন প্রাক্তন খেলোয়াড় পদ্মশ্রী ও অন্যান্য সরকারি পদক ফেরানোর কথা ঘোষণা করেছেন।

সরকারি সূত্রের খবর, পঞ্জাবে চাষিদের আন্দোলনে রাশ টানতে কেন্দ্র সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্র সিংহকেও বার্তা পাঠিয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে চাষিদের আন্দোলনে কংগ্রেসের রাজনৈতিক সুবিধা হলেও, পাকিস্তান-সীমান্তবর্তী রাজ্যে অশান্তি নিয়ে ক্যাপ্টেনও চিন্তিত।

আজ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে বৈঠক করে ক্যাপ্টেন তাঁর উদ্বেগের কথা জানান। বৈঠকের পরে ক্যাপ্টেন বলেন, ‘‘কেন্দ্রের সঙ্গে চাষিদের আলোচনা চলছে। আমার এখানে সমাধান করার কিছু নেই। আমি নিজের বিরোধিতার কথা জানিয়েছি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সমাধানের অনুরোধ করেছি। কারণ, এতে আমার রাজ্যের অর্থনীতি এবং দেশের নিরাপত্তায় প্রভাব পড়ছে।’’

এদিকে বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের দ্বিতীয় দফার বৈঠকে ভারতের কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং টোমার, রেলমন্ত্রী পীযুষ গয়াল ও শিল্পমন্ত্রী সোম প্রকাশ কিছুটা নমনীয় হওয়ার ইঙ্গিত দেন। যেমন বলা হয়, ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) রাখার বিষয়ে সরকার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে পারে। চুক্তি চাষের বিরোধ মেটাতে কৃষকদের আদালতে যাওয়ার অধিকারও দেওয়া যায়। নতুন আইনে এই জাতীয় বিরোধ মেটানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটকে।

ফসলের গোড়া খেতে পোড়ানোর শাস্তি হিসেবে জেল ও জরিমানা তুলে দেওয়ার প্রস্তাবেও কেন্দ্র রাজি। বৈঠক শেষে কৃষিমন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানান, এমএসপি ছিল, আছে, থাকবেও। অন্যান্য বিষয়ও সরকার সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনায় রাজি। প্রশ্ন হলো, এমএসপির প্রতিশ্রুতি আইনে রাখা না হলে কৃষকনেতারা কতটা সন্তুষ্ট হবেন। তাঁদের এখনো দাবি, একমাত্র আইন বাতিলই তাঁদের সন্তুষ্ট করবে ও আন্দোলন প্রত্যাহারে সাহায্য করবে। সরকার আইন প্রত্যাহারে নারাজ।

কৃষক–সরকার দূরত্ব ও বিশ্বাসের ঘাটতি এতটাই যে বৃহস্পতিবার সরকারের ব্যবস্থা করা মধ্যাহ্নভোজ কৃষকনেতারা গ্রহণ করেননি। আন্দোলনকারীদের পাঠানো খাবার তাঁরা খান। কৃষক বিক্ষোভের সমর্থনে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কৃষক সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেছে। সর্বত্র দাবি উঠেছে আইন বাতিলের।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here